বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার প্রথমবারের মতো দেশজুড়ে পালিত হয়েছে ‘জুলাই শহীদ দিবস’। গত বছরের ১৬ জুলাই সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলীতে শহীদ হন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। একই দিনে ঢাকা ও চট্টগ্রামে শহীদ হন আরো পাঁচজন। দিবসটিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ছিল। শহীদদের মাগফিরাত কামনায় মসজিদে বিশেষ দোয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার অনুষ্ঠিত হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যে স্থানগুলোতে শহীদরা প্রাণ হারান, সেসব স্থানে শহীদদের নামে স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প স্থাপনের কাজ শুরু হয়। এই কাজ চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। আয়োজনের মধ্যে ছিল রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে জুলাইয়ের গান ও ড্রোন শো। জুলাইয়ের গান ও ড্রোন শো ছিল চট্টগ্রামেও।
কর্মসূচিতে ১৬ জুলাই স্মরণে মিউজিক্যাল ভিডিও শেয়ার। এর থিম মিউজিক হবে ‘কথা ক’। সেই সঙ্গে গতকাল ‘একটি শহীদ পরিবারের সাক্ষ্য’ প্রামাণ্যচিত্রের তৃতীয় খ- প্রচার এবং একজন জুলাই যোদ্ধার স্মৃতিচারণার ভিডিও শেয়ার করা হয়। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। পাশাপাশি সব মোবাইল গ্রাহকের কাছে ভিডিওর ইউআরএল পাঠানো হয়।
এর আগে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে জুলাই শহীদ দিবস। এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদকে।’
জুলাই শহীদরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সবাই এগিয়ে যাবÍআজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়, তা পরে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। সেই আন্দোলনের মধ্যে ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। তার মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলন আরও তীব্রতা পায়।
পরে তীব্র আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। দেড় দশক ধরে চলা আওয়ামী লীগের শাসনের অবসান হয়। এর তিন দিন পর ৮ আগাস্ট নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। অভ্যুত্থানের সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত ৩৬ দিনের নানা অনুষ্ঠান ঘোষণা করে সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় এদিন পালিত হয় জুলাই শহীদ দিবস।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, ১৬ জুলাই বিকালের দিকে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে পুলিশ তাদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসাবে নেতৃত্বে ছিলেন আবু সাঈদ। পুলিশের ধাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে আবু সাঈদ দুই হাত মেলে বুক পেতে রাস্তায় পুলিশের সামনে প্রতিরোধ করেন। তখন রাস্তার উলটো দিকে মাত্র ১৫ মিটার দূর থেকে অন্তত দুই পুলিশ সদস্য শটগান থেকে সরাসরি তার ওপর গুলি চালান। আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় সারা দেশ বিক্ষোভে ফেটেন পড়ে। আন্দোলনে নেমে আসে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সরকার আবু সাঈদ হত্যার দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, প্রতি বছর ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’ হিসেবে পালিত হবে। উপসচিব তানিয়া আফরোজ স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দিনটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসের তালিকায় ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রাজশাহী
রাজশাহী ব্যুরো : গতকাল বুধবার জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে শহীদ পরিবারের সদস্যগণ অংশ নেন।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খন্দকার আজিম আহমেদ। এসময় প্রধান অতিথি শহীদ পরিবার ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানান। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান, জেলা পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রশাসক ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু: রেজা হাসান। স্মরণসভায় বক্তব্য দিতে গেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এ সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তারা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তাদের স্বজনদের হত্যাকারীদের বিচার না হওয়ায় তারা আজো কষ্ট বুকে নিয়ে বেঁচে আছেন। কেউ কেউ বিচার দাবির পাশাপাশি শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। অতিথি বক্তা মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, “শহীদ পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে সেদিনের আন্দোলন বেগবান হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা আর কোনো দেশে ঘটেনি।” বক্তারা জুলাই আন্দোলনকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন। দোয়া মাহফিলে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হলো ‘জুলাই শহিদ দিবস’। বুধবার (১৬ জুলাই ২০২৫) জোহরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ লুৎফর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এ টি এম জাফরুল আযম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত), রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর প্রধান ক্যাম্পাস, ধানমন্ডির নগর কার্যালয় এবং আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহেও যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ দিবস পালিত হয়।
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) গভীর শ্রদ্ধা, আবেগ ও দায়িত্ববোধের মধ্য দিয়ে পালিত হলো ‘জুলাই শহিদ দিবস’। ১৬ জুলাই ২০২৫ বুধবার দিবসটি উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
দিবসের শুরুতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ঐতিহাসিক ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে নেমে আসে এক আবেগঘন পরিবেশ।
গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিকে আরো দৃঢ়ভাবে ধারণ ও সংরক্ষণের জন্য গাকবি কর্তৃপক্ষ মাসব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে ‘জুলাই শহিদদের স্মরণে’ বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।
২৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কৃষি অনুষদ ভবনের নিচতলায় চলবে শহিদদের স্মৃতিচারণমূলক স্থিরচিত্র প্রদর্শনী। ৫ আগস্ট আয়োজন করা হবে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও রক্তদান কর্মসূচি, বিজয় র্যালি, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা এবং ঐতিহাসিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই। দিনটি হয়ে থাকবে চট্টগ্রামের ইতিহাসে সাহস, আত্মত্যাগ ও ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের এক গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে। আগের দিন ছাত্রলীগের হামলার মুখে আন্দোলনকারীরা পিছু না হটে যেভাবে ঘুরে দাঁড়ায় এবং ১৬ জুলাই মরণপণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তা ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক।
সেদিন দুপুরের পর থেকেই চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়, ষোলশহর, মুরাদপুর ও আশপাশের এলাকাগুলো রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং আওয়ামী লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি।
তবে হাজার হাজার শিক্ষার্থীও সেদিন নিরস্ত্র হাতে রাস্তায় নেমে আসেন। তারা কোনো প্রকার সন্ত্রাসের কাছে মাথানত করেননি। সংঘর্ষে প্রাণ হারান তিনজন: ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরাম, ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মী ফয়সাল আহমেদ শান্ত, এবং দোকানকর্মী মো. ফারুক। এই তিন শহিদের রক্তের ঋণেই যেন আন্দোলনের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায় এবং জনগণের অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
নীলফামারী
নীলফামারী সংবাদদাতা : নীলফামারীতে জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক সাইদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোহসিন, জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মন্টু, জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি) জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুল মজিদ, জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী পৌর সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান আজাদ প্রমূখ।
পঞ্চগড়
পঞ্চগড় সংবাদদাতা: পঞ্চগড়ে জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।
এতে শহীদ পরিবারের সদস্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, জুলাই আন্দোলনে অংশ নেয়া সাধারন শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা কর্মী, রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা সহ সরকারি বেসরকারি দপ্তরের বিভিন্নপর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মো: সাবেত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর পঞ্চগড় জেলা আমীর মাও: ইকবাল হোসাইন, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য রিনা পারভিন, এনসিপির সদর উপজেলা সমন্বয়ক তানবিরুল বারি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোকাদ্দেসুর রহমান সান, খোরসেদ মাহমুদ, মাসুদ রানা,মাহফুজ রহমান, আবু হাসান, গণমাধ্যম কর্মী সরকার হায়দার প্রমুখ ।
নোয়াখালীতে শহীদ দিবস পালন
নোয়াখালী সংবাদদাতা : নোয়াখালী জেলা প্রশাসক এর উদ্যোগ শহীদ দিবস পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। খন্দকার ইশতিয়াক আহমদ জেলা প্রশাসক, এর সভাপতিত্বে শহীদ দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, এতে শহীদ পরিবার সদস্য শহীদ মাহমুদ হোসেনের মা কেঁদে কেঁদে বলেন, সরকারের অন্যায় আদেশে আপনারা কারো মায়ের বুকে গুলী করে ঝাঝরা করবেন না, আমার ছেলে মামুন হাজার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে জীবন উৎসর্গ করেছে,শহীদ ফারুকের বড়ো ভাই বলেন, স্বৈরশাসক এর দোসররা এখনও ষডযন্ত করছে, স্বৈরাচার হঠাতে হলে আবার আমরা সপরিবারে শাহাদাত বরন করতে মাঠে নামবো ইনশাল্লাহ। অনুষ্ঠানে শহীদ নাসিমার বোন কোহিনূর আবেগাপ্লুত হয়ে বক্তব্য দিতে পারেনি, বিপ্লবে আহত জুলাই যোদ্ধা ছাত্র নেত হামদে রাব্বি, সোলাইমান স্বপন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন নেতা আরিফুল ইসলাম, সাংবাদিক আহসানুল আলম খসরু, ডা বোরহান উদ্দিন, মাহবুব হাসান চৌধুরী রাসেল, আবুল কালাম আজাদ, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির ইসহাক খন্দকার ইশার জেলা সভাপতি মাওলানা ফিরোজ আলম, নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা মরিয়ম সিমি, নোয়াখালী পুলিশ সুপার সৈয়দ আবদুল্লাহ ফারুক প্রমূখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আমতলীতে জুলাই শহিদ দিবস পালিত
আমতলী (বরগুনা) সংবাদাতা : বরগুনার আমতলী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় আমতলীতে ১৬ জুলাই শহিদ দিবস পালিত হয়েছে । দিবসটি পালন উপলক্ষে বুধবার দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদের হল রুমে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রোকনুজ্জামান খানের সভাপতিত্ত্বে ও আমতলী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো: রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমতলী সহকারী কমিশনার ভূমি মো: তারেক হাসান , আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মো: আমির হোসেন সেরনিয়াবাদ, আমতলী উপজেলা বি,এন,পির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক জহিরুল ইসলাম ভিপি মামুন , পৌর বি,এন,পির আহবায়ক মো: কবির উদ্দিন ফকির , জাতীয়তাবাদী মুক্তি যোদ্ধা দল বরগুনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: মনিরুল ইসলাম তালুকদার , কৃষি অফিসার মো: রাসেল মিয়া , বক্তব্য রাখেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: সফিউল আলম , আমতলী কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো: ইউনুস আলি হাওলাদার , ইসলামী অন্দোলনের পৌর শাখার সভাপতি মো: কামরুজ্জামান জামায়াতে ইসলামী উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা মোফাজ্জল হোসেন পৌর সেক্রেটারি মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, এন,সি,পির প্রতিনিধি মো: বাইজিদ হোসেন , বৈসম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোনের ফাতিমাতুেজ্জাহরা মৈতী , সাংবাদিক মো: জাকির হোসেন ,সাইফুল্লাহ নাসীর ,মো: মনিরুল ইসলাম , আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন (প্রমুখ) । আলোচনা শেষে জুলাই আন্দোলনের সকল শহিদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয় ।
ঈদগাহ শাহ জব্বারিয়া মাদরাসায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল
ঈদগাঁও (কক্সবাজার) সংবাদদাতা : ঈদগাঁওয়ের অন্যতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈদগাহ শাহ জব্বারিয়া আদর্শ দাখিল মাদরাসার উদ্যোগে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় মাদরাসা মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও জননেতা শহিদুল আলম বাহাদুর। সভাপতিত্ব করেন মাদরাসা সুপার মাওলানা মনছুর আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঈদগাঁও উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ছলিম উল্লাহ জিহাদী এবং মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি লায়েক ইবনে ফাজেল।
সভায় সহকারী শিক্ষক মাস্টার নেজাম উদ্দিন সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সহ-সুপার মাওলানা নুরুল আজিমসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
কমলনগর
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদের স্পন্দন সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাহাত উজ জামানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আরাফাত হোছাইন, কৃষি কর্মকর্তা ইকতারুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল কাদের মোজাহিদ,জেএসডির সভাপতি অবদুল মোতালেব, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল খায়ের, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম দিদার হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি ইউছুফ আলী মিঠু, তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল্লা আল মামুন, খেলাফত মজলিস কমলনগর উপজেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক, আহত জুলাই যোদ্ধা আবদুল আহাদ ফারাবী ও শহীদ মাজাহারের ভাই হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
চকরিয়া
চকরিয়া সংবাদদাতা: চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে জুলাই শহীদ দিবস-২০২৫ এর আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। এতে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ ওয়াসিম আকরাম, শহীদ আহসান হাবিবসহ সেদিনের সকল শহীদের। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদের মোহনা মিলনায়তনে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব, চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইয়াছিন মিয়াসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, চকরিয়া প্রেসক্লাব কর্মকতর্কা ও জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রপ্রতিনিধিসহ শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এসময় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন রাজনৈতক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার মাওলানা আমির হোসেনের সার্বিক তত্বাবধানে জুলাই শহীদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের শারীরিক সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া মুনাজাত সম্পন্ন হয়।