জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ইসলাম পালনের ন্যূনতম অধিকার তারা (আওয়ামী লীগ) বাংলার মানুষকে দিতে চায়নি। গতকাল শনিবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। এসময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও উপস্থিত ছিলেন। আখতার হোসেন বলেন, নির্বাচনে উচ্চ কক্ষে যারা পিআর চায় না তারা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করে। বাংলাদেশে ধর্ম পালনের কারণে কোনো মানুষের প্রতি আর কোনো বৈষম্য হতে দেব না। তিনি আরও বলেন, এ দেশের মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এটা আমাদের প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মানুষের ওপরে আওয়ামী লীগ এবং তার দোসররা যে অপরাধ সংগঠিত করেছে সেটাকে যদি বিচারের আওতায় আনা না হয় তাহলে ২৪ এর শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। আখতার হোসেন বলেন, আর যেন ফ্যাসিবাদ এবং স্বৈরাচার জন্ম দিতে না পারে এজন্য আওয়ামী লীগকে অবিলম্বে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সুশীল সরকারের ভূমিকায় নয়, বরং অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার হিসেবে দেখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। এনসিপির এ নেতা বলেন, অভ্যুত্থানের এক জুলাই পেরিয়ে আমরা আরেক জুলাইয়ে এসেছি। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে মুজিববাদীদের ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। গোপালগঞ্জে এখনো মুজিববাদীরা আস্তানা গেড়ে রয়েছে। শুধু আইনিভাবে এই মুজিববাদের মোকাবিলা করা যাবে না। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে এই মুজিববাদের কোমর ভেঙে দিতে হবে। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু এই মুজিববাদের প্রশ্নে অভ্যুত্থানের সব সৈনিককে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সারজিস বলেন, বাংলাদেশে আবারো মুজিববাদী-ভারতপন্থি শক্তি সক্রিয় হচ্ছে। এ দেশে আর কোনো পন্থির জায়গা হবে না। দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদের কোনো জায়গা হবে না।
তিনি আরও বলেন, হাজারের অধিক ছাত্রজনতা জীবন দিয়েছে। গত ৫ আগস্ট যে স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, সে স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমরা সুশীল সরকারের ভূমিকা চাই না। আমরা তাদের অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই। বাংলাদেশে খুনি হাসিনার বিচার হতেই হবে। দেশের বিচার বিভাগকে কোনো দলের বিচার বিভাগ হিসেবে দেখতে চাই না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ক্ষমতার তোষামোদ বাহিনী হিসেবে দেখতে চাই না। আমাদের নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে। নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ফ্যাসিস্টবিরোধী আমাদের যে শক্তি, এদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ থাকতে গিয়ে অন্ধভাবে কারো দালালি করা যাবে না। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্তু তার সৌন্দর্য নষ্ট করা যাবে না। তবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।