প্রায় ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনা ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। তিনি বলেন, ঢাকায় এসে আমি খুশি। খাবার ভালো ছিল ও শপিং ভালো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন আমনা বালুচ। বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকটি শুরু হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় আয়োজিত এফওসিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ তাদের নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন। বৈঠককালে উভয়পক্ষ দুদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর সামগ্রিক দিক বিশেষ করে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। এর আগে গত বুধবার ঢাকায় পৌঁছান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ।
এদিকে দীর্ঘ সময় পর দুই দেশের মধ্যে এমন আলোচনাকে ইতিবাচক অবস্থান থেকে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশকেই মনোযোগী হতে হবে। পাশাপাশি আমদানি-রফতানি নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা আছে পাকিস্তানে। এছাড়া সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এতে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। পারস্পরিক বোঝাপড়া আর রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে উভয়পক্ষের জন্য বৈঠকটি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক শাহাব এনাম বলেন, পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ সফর দেশের জন্য ইতিবাচক। অর্থনীতিকে যেহেতু আমরা গতিশীল করতে চাচ্ছি, তাই এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধসহ তাদের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলা দরকার। এদিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার চলতি মাসের ২৭-২৮ তারিখে ঢাকা সফর করবেন বলে জানা গেছে। ২০১২ সালের পর বাংলাদেশে এটিই হবে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সর্বশেষ এফওসি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এক যুগের বেশি সময় পর দুই দেশের মধ্যে ৬ষ্ঠ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক এটি।