সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন রাজধানী সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। চলছে নিরীহ ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের নামে ভয় দেখিয়ে দোকানপাট দখলের পায়তারা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে, এখনও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগে প্রকাশ।
ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত সহযোগিতা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাওয়ায় উল্টো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের রোষানলে পড়তে হয়েছে। কারণ ওইসব সন্ত্রাসী চাঁদাবাজারা তদন্তকারী প্রশাসনের লোকজনের সাথে ইতোমধ্যে গড়ে তুলেছেন সখ্যতা। আর অর্থের বিনিময়ে অভিযোগকারীদের পরিচয় সংগ্রহ করে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী ছাড়াও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে রাজধানী সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ভয়ভীতির মধ্যেই তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। যে কোন সময় সন্ত্রাসীরা খুন খারাপি রাহাজানির মত ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন। সন্ত্রাসীরা মার্কেট ব্যবসায়ীদের সমিতির অফিস অবৈধভাবে দখল করে আছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, রাজধানীর সুপার মার্কেটে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের অধিন মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির নির্বাচন দীর্ঘ প্রায় ৩১ বছর ধরে হয়না না। গত ৪ মে ব্যবসায়ী মো. নিজামুল হক নিজাম রাজধানী মার্কেটের ব্যবসায়ী হিসেবে উক্ত মার্কেট সমিতির নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের শ্রম অধিদপ্তরে একটি লিখিত আবেদন জমা দেন। এরপর শ্রম অধিদপ্তর তার কিছুদিন পরই শ্রম আদালতে মামলা করে তা বন্ধ করে দেয়। এরপর ব্যবসায়ীরা একত্র হয়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে। আর তখনই ব্যবসায়ীরা জানতে পারেন যে, আজমল হোসেন বাবুল ও তার আত্মীয় স্বজনের নামে প্রায় ৬৪৮টি দোকান মার্কেটে রয়েছে। এছাড়া তার রাজধানী সুপার মার্কেটসহ অন্যান্য মার্কেটেও অনেকগুলো দোকান রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী জানান, জুলাই ছাত্র আন্দোলনের সময় একদল সন্ত্রাসী পুলিশের পোশাক পরে পুলিশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজধানীর মার্কেট এলকাায় ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়েছিল। এখন সেই সন্ত্রাসীরাই আওয়ামী লীগ বিরোধী এবং ছাত্র জনতা আন্দোলনের সহযোগি বলে মার্কেটে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। অপরদিকে রাজধানী সুপার মার্কেটের বিদ্যুৎ বিল টেম্পারিং ও চুরির মামলা ফাইলবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তারা জানান, পুলিশ সদরদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ওয়ারী জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এবং সূত্রাপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার(এসি) এর কাছে সন্ত্রাসীদের নানা অপকর্মের প্রমাণ রয়েছে যার সঠিক তদন্ত হলেই সত্যতা পাওয়া যাবে বলে ব্যবসায়ীদের দাবী।
জানা গেছে, সন্ত্রাসীচক্র রাজধানী মার্কেটের একজন জুতা ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আবার জাকির মোড়ল নামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্র দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া অনেক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে মার্কেট থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠাণ দখল করারও অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ সদরদফতর ও ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।