জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘোষণার দিন আগামীকাল বৃহস্পতিবার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ।
এদিকে এই কর্মসূচিকে ঘিরে সারা দেশে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সম্ভাব্য নাশকতা প্রতিরোধে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান, বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম।
বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো—এয়ারপোর্ট, আব্দুল্লাহপুর, ধানমণ্ডি ৩২, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, কাকরাইল, হাইকোর্টসহ আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে ১২ প্লাটুন বিজিবি।
রাজধানীতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকার প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চলছে, যাচাই করা হচ্ছে কাগজপত্রও।
ডিবি পুলিশের অভিযানে মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগের ৪৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিএমপির আটটি অপরাধ বিভাগও পৃথক অভিযানে আরও কয়েকজনকে আটক করেছে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউ, ফকিরাপুল, কাকরাইল, এলিফ্যান্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকার হোটেল ও মেসে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় অতিথিদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পেশা এবং ঢাকায় আসার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মোবাইল ফোনও তল্লাশি করা হয় আওয়ামী লীগ–সংযোগ যাচাইয়ের জন্য।
রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম জানান, “নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হচ্ছে। কলাবাগানের একটি মেস থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারের আগে সন্দেহভাজনদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং তাদের তথ্য পুলিশের অপরাধ ডাটাবেজে যাচাই করা হয়। বেশিরভাগের বিরুদ্ধেই পুরোনো মামলা পাওয়া গেছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামীকাল ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে নাশকতা ঘটাতে না পারে, সেজন্য রাজধানীতে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি কেউ সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।