ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন তালিকা অনুযায়ী, মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬১৮টি। এর সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ২০টি কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেন ইসির সিনিয়র সচিব মো. আখতার হামিদ। তিনি জানান, ভোটারদের সংখ্যা এবং কাঠামো বিশ্লেষণ করে কেন্দ্র ও ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে মোট ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ২০১ জন। প্রতি তিন হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬১৮টি।

ভোটকক্ষের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট অনুপাতে হিসাব করা হয়েছে। পুরুষ ভোটারদের জন্য ৬০০ জনে একটি কক্ষ এবং নারী ভোটারদের জন্য ৫০০ জনে একটি কক্ষ ধরেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে হিসাবে পুরুষদের জন্য ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৯টি এবং নারীদের জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ১০৭টি কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার মোট ভোটকক্ষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি।

ইসি সচিব আরও জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ১৫০টি। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৪২ হাজার ৬১৮টি। এই খসড়া তালিকা নিয়ে কেউ দাবি বা আপত্তি জানাতে চাইলে, তারা ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসিতে আবেদন করতে পারবেন। এসব দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে ১২ অক্টোবরের মধ্যে। এরপর চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০ অক্টোবর।

আগামী নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে ইসি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করছে। সে লক্ষ্যে ধাপে ধাপে কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা নয়। এ বিষয়ে কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।

সম্প্রতি ইসির উপসচিব রাশেদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি এর অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকেও দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৬ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লজিস্টিক সুবিধা ও নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠকের আলোচ্যসূচির (সংখ্যা ৯) আলোকে এ বিষয়ে কমিশনের অবস্থান জানানো হলো।

তাতে উল্লেখ করা হয়, ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন বা বাহিনীর সদস্যদের বডিওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের আওতার মধ্যে পড়ে না। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের করণীয় কিছু নেই বলেই কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।