দেশে বড় ধরণের অপরাধমূলক ঘটনা তুলনামূলক বাড়েনি। পরিকল্পিত ভাবে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া অন্যান্য সহিংস ঘটনা পূর্বের বছরগুলোর চেয়ে অনেকটাই কমেছে। পুলিশের পরিসংখ্যানেও সে তথ্য উঠে এসেছে। সাধারণ নাগরিকদের ভাষ্যমতে, বিগত বছরগুলোতে মানুষের মধ্যে যে ধরণের আতঙ্ক ছিল বর্তমানে সেরকম নেই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শাসনামলে দলীয় পরিচয়ে চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী, অপহরণকারীদের যে দৌরাত্ম ছিল এখন তা নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছুটা শিথিলতায় কোথাও কোথাও অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হলেও দ্রুত এর সাথে জড়িতদের আটক করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ সদর দফতরের তথ্যমতে- চলতি বছরের (২০২৫) জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে হত্যাকান্ড বিগত পাঁচ বছরের একই সময়ের সংঘটিত ঘটনার চেয়ে কম। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে হত্যাকান্ড ঘটেছে মোট ১৯৩৩টি। সে হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে হত্যাকান্ড ঘটেছে ৩২২টি করে। আগস্ট বিপ্লবের পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই চার মাসে হত্যাকান্ড ঘটেছে ১৬২১টি। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০ মাসে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে মোট ৩৫৫৪টি। গড়ে এ সময়ে ঘটেছে প্রতি মাসে ৩৫৫টি করে। পাশাপাশি ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতি মাসে গড়ে খুন হয়েছে যথাক্রমে ৬৮৫, ৫০৩, ৫২১, ৫৩৫ ও ৫৮৯টি করে।
জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে সশস্ত্র বাহিনী। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশের প্রতিটি জেলায় ক্যাম্প বসিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে অন্যান্য বাহিনীর সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও র্যাব, আনসারসহ অন্যান্য বাহিনীগুলো যৌথভবে কাজ করছে। পুলিশ সদর দফতরের বিগত পাঁচ বছরের অপরাধের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পূর্বের চেয়ে ভালো। অপরাধমূলক কর্মকান্ডের পরিসংখ্যান বিগত বছরের চেয়ে কম। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০ মাসের অপরাধের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বিগত বছরের এ সময়ের চেয়ে অপরাধের মাত্রা কমের দিকে। এসময় বড় ধরণের খুন-ডাকাতি ও চাঁদাবাজির ঘটনা কম ঘটেছে।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলতি বছর দেশে অপরাধের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে জনমনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছর বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এমন দাবি সঠিক নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে বড় ধরনের অপরাধের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে। পরিসংখ্যানে বড় ধরনের অপরাধ দ্রুত বাড়ার কোনো লক্ষণ নেই বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাস্তবে বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধের হার কমছে বা একই পর্যায়ে রয়েছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে সামান্য বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। প্রেস উইং নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ, অপরাধের হার মোটামুটি স্থিতিশীল, যাতে বোঝা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
গত বছর ৫ আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর তাৎক্ষনিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছিল। পুলিশের প্রতি মানুষের অনাস্থা থাকায় তাতক্ষনিক কয়েকটি থানায় সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। ভেঙে পড়েছিল পুলিশের চেইন অব কমান্ড। অনেক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালনে ভয় পেয়েছিল। তখনকার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ডিএমপি কমিশনার, এসবি প্রধান, রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ শীর্ষ কয়েকশত পুলিশ সদস্য পালিয়ে যায়। ছাত্রজনতার ওপর প্রকাশ্যে গুলী বর্ষন ও হামলা চালানো, মানুষ পুড়িয়ে নারকীয় তান্ডব সৃষ্টিকারি পুলিশ সদস্যরা গাঢাকা দেয়। সরকার তখন নতুন পুলিশ প্রধান নিয়োগ করে পুলিশের চেইন অব কামান্ড ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। ডিএমপি কমিশনার, র্যাব, এসবি, সিআইডি, ডিবি, রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ থানাগুলোতে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ঢেলে সাজানো হয়। আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এরপর কতিপয় ব্যক্তি মব সৃষ্টির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার অবনিতি ঘটানোর চেষ্টা করলেও সরকার কঠোর হাতে দমন করায় পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হচ্ছে।
পুলিশের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০ মাসে ডাকাতি ৬১০, দস্যুতা ১৫২০৬, খুন ৩৫৫৪, দ্রুত বিচারে মামলা ৮৯৮, দাঙ্গা ৯৮. ধর্ষণ ৪১০৫, এসিড নিক্ষেপ ০৫, নারী ও শিশু নির্যাতন ২০৭২৬, অপহরণ ৮১৯, পুলিশ আক্রান্ত ৪৭৯, সিঁধেল চুরি ২৩০৪ ও চুরির ঘটনা ঘটেছে ৭৩১০টি। এছাড়াও অস্ত্র, বিষ্ফোরক, মাদকদ্রব্য, চোরাচালানসহ এসব ঘটনায় মোট মামলা হয়েছে ১৪৪৯৫৫টি। পাশাপাশি ২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসের অপরাধ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এসময় ক্রমে অপরাধমূলক কর্মকান্ড কমে আসছে। চলতি বছরের (২০২৫) জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ডাকাতি ৩৬৭, দস্যুতা ৯৭২, খুন ১৯৩৩, দ্রুত বিচার ৪৯৬, দাঙ্গা ৫৩, এসিড নিক্ষেপ ০২, নারী নির্যাতন ৬১৪৪, শিশু নির্যাতন ২১৫৯, অপহরণ ৫১৭, চুরি ৪৫৪০, অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকসহ অন্যান্য মামলার সংখ্যা মোট ৯১৩৩৮টি।
২০২৪ সালে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ডাকাতি ৪৯০, দস্যুতা ১৪০৫, খুন ৪১১৪, দ্রুত বিচার ১২২৬, দাঙ্গা ১২৫, ধর্ষণ ৪৩৯৪, এসিড নিক্ষেপ ০৮, নরী নির্য়াত ১০১৯৮, শিশু নির্যাতন ২৯৬৪, অপহরণ ৬৪২, পুলিশ আক্রান্ত ৬৪২, সিঁধেল চুরি ২৬৫৫, চুরি ৮৬৫৩, অস্ত্র, বিষ্ফোরক, মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য ঘনায় মামলা হয়েছে মোট ১৭২৬৬৩টি।
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ডাকাতি ৩২৯, দস্যুতা ১২২৭, খুন ৩০২৩, দ্রুত বিচার ১১০৪, দাঙ্গা ২৮, ধর্ষণ ৫১৯১, এসিড নিক্ষেপ ১০, নারী নির্য়াত ১১০২৭, শিশু নির্যাতন ২৭১৩, অপহরণ ৫৬৩, পুলিশ আক্রান্ত ৬০৭, সিঁধেল চুরি ২৪৮৩, চুরি ৯৪৭৫, অস্ত্র, বিষ্ফোরক, মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য ঘনায় মামলা হয়েছে মোট ১৯৫৪৩৬টি।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ডাকাতি ৪০৬, দস্যুতা ১১২৮, খুন ৩১২৬, দ্রুত বিচার ১১৩২, দাঙ্গা ১৩, ধর্ষণ ৬০৩২, এসিড নিক্ষেপ ১১, নারী নির্য়াতন ১১৫১৮, শিশু নির্যাতন ৩২০৫, অপহরণ ৪৬০, পুলিশ আক্রান্ত ৬০১, সিঁধেল চুরি ২৮১০, চুরি ৯৫৯১, অস্ত্র, বিষ্ফোরক, মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য ঘনায় মামলা হয়েছে মোট ২০৪২৩০টি।
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ডাকাতি ৩০৮, দস্যুতা ৯৭১, খুন ৩২১৪, দ্রুত বিচার ১১১৭, দাঙ্গা ২৩, ধর্ষণ ৬৩১৪, এসিড নিক্ষেপ ১২, নারী নির্য়াত ১২৮৫৫, শিশু নির্যাতন ২৯২৮, অপহরণ ৪৫৪, পুলিশ আক্রান্ত ৬০৮, সিঁধেল চুরি ২৬৪৫, চুরি ৮৪৯৮, অস্ত্র, বিষ্ফোরক, মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য ঘনায় মামলা হয়েছে মোট ১৯৭৫১০টি। ২০২০ সালে ডাকাতি ৩০২. দস্যুতা ৯৭৮, খুন ৩৫৩৯, দ্রুত বিচারে মামলা ৮৭১, দাঙ্গা ১৩, ধর্ষণ ৬৫৫৫, এসিড নিক্ষেপ ১৬, নারী নির্যাতন ১৩৪৩১, শিশু নির্যাতন ২৫১৫, অপহরণ ৪৮৬, পুলিশ আক্রান্ত ৪৪৯, সিঁধেল চুরি ২৫৩৩, চুরি ৭২০০, অস্ত্র আইন, বিষ্ফোরক, মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৮৭৯২৬টি।
সম্প্রতি সেনাসদরে এক ব্রিফিংয়ে সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গুলির খোঁজ পেয়েছে। আর গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৯ হাজার ৬৯২টি অস্ত্র। একই সময়ে সেনাবাহিনী ১৫ হাজার ৬৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা বলেন, মবের ঘটনা প্রত্যাশিত নয়। এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার আছি। পটিয়ার ঘটনায় সেনাবাহিনী দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কথিত জনতার মাধ্যমে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে হেনস্তা করার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে সংবাদ সম্মেলনে। জবাবে কর্নেল শফিকুল বলেন, এ ঘটনার পরের দিনই একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশে হস্তান্তর করি। এর পর যদি কেউ জামিন পেয়ে যায়, তাহলে সেনাবাহিনীর কিছু করার থাকে না। এ ধরনের ঘটনায় সেনাবাহিনী সব সময় সোচ্চার। কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে সংঘটিত নারী নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সেনাবাহিনী স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মূল আসামি ফজর আলী এবং আরও চার ভিডিও ধারণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ভুক্তভোগী পরিবারের সুরক্ষা ও সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কার্যক্রমে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।
গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সদরদফতর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে বিগত ৬ মাসে কোনো হত্যাকাণ্ডই সংঘটিত হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতর। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১০ জুলাই বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে বিগত ৬ মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) মোট ২৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনাসহ গত ১১ মাসে ২৪৪২ টি সাম্প্রদায়িক হামলা ও সহিংসতার ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ উল্লিখিত ২৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে। ২৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনার মধ্যে ২২টি ঘটনায় নিয়মিত হত্যা মামলা এবং ৫টি ক্ষেত্রে অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের কারণগুলোর মধ্যে জমি-জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২টি (ভাতিজা কর্তৃক চাচাকে হত্যা, চাচাতো ভাইদের মধ্যে মারামারির ফলে একজন নিহত), আর্থিক লেনদেন সংক্রান্তে ২ জন (তন্মধ্যে মাদক ক্রয়- বিক্রয়ের টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে ১ জন), ডাকাতি বা দস্যুতার ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ৭ জন, সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য সন্দেহে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের গুলিতে ১ জন, তরমুজ ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে মারামারিতে ১ জন, গলায় ফাঁস নিয়ে ৩ জনের আত্মহত্যা, মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এমন ১১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় (ভবঘুরে বা মানসিকভাবে অসুস্থ মহিলার সন্দেহজনক মৃত্যু, জুম চাষে গিয়ে খেয়াং নারী নিহত, তামাকক্ষেত হতে পাতা কুড়াতে যাওয়া নারীর মৃতদেহ উদ্ধার, বাড়ির পাশ হতে জখমহীন মৃতদেহ বা অন্যান্য স্থান থেকে মৃতদেহ উদ্ধার ইত্যাদি) তদন্ত চলমান রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর মোট ৪৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ১৫ জন আসামি বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে এবং ১৮ জন আসামি ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। কোনো হত্যাকাণ্ডই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বা সাম্প্রদায়িকতার কারণে সংঘটিত হয়নি মর্মে তদন্তে পাওয়া যাচ্ছে।