বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, অযৌক্তিকভাবে গণছুটি নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের কার্যক্রম ব্যাহত করার চেষ্টা করলে সরকার মানবে না। সরকারের কাছে বিকল্প ব্যবস্থা আছে। দ্রুত কাজে যোগ না দিলে সরকার সেই পথে হাঁটবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন বিঘ্ন ঘটাতে তাদের অনেকে চেষ্টা করছেন বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদন আছে। মন্ত্রণালয় তা মনে করে না, তবে তারা ফিরে না আসলে তাই সত্য বলে ধরে নেওয়া হবে।’
সবাইকে দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছুটিতে থাকায় তাদের সঙ্গে কিভাবে বৈঠক সম্ভব? তারা কাজে যোগ দেওয়ার পর যেকোনো সময় আলোচনায় বসা সম্ভব। বিদ্যুৎ অত্যাবশ্যকীয় সেবা, অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সবাইকে তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ফিরে আসতে আগে ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল, তখন অনেকে ফিরে এসেছিলেন। অনেকে আবার বাধা দিয়েছেন। সবাইকে দ্রুত কাজে যোগ দেওবার আহ্বান জানাই।’
তিনি জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কেনাকাটায় দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে সাবেক সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য চাকরি বিধিমালা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সমস্যা নিয়ে উদাসীন এটা মোটেও ঠিক নয়, সরকার সম্ভাব্য সব কিছু করা হয়েছে।
ফাওজুল কবির বলেন, ‘অনেককে কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যারা এমন করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ৩টি জিডি করা হয়েছে। গণছুটির পরেও বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সরকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। সরকার সহনশীলতার পরিচয় দিচ্ছে, দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেশ কিছু দাবি পূরণ করা হয়েছে। অনেক দাবি পূরণ করতে আইন ও বিধির পরিবর্তন করতে হবে। এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।’
সচিবালয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের আন্দোলন নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আরো বলেছেন, বাসা-বাড়ির গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার জন্য ওপর থেকে চাপ আছে।
বাসা-বাড়িতে নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘না, বরং বাসা-বাড়িতে আমরা যে গ্যাস দেই সেটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমার ওপর চাপ আছে। কিন্তু আমি বন্ধ করি না, কারণ এটা যদি করি তাহলে আমি আমার নিজের বাসায় ঢুকতে পারবো না।’ তবে কোথা থেকে বা কী ধরনের চাপ আছে, সে বিষয়ে উপদেষ্টা কিছু জানাননি।
অনেক এলএনজি আমদানি হচ্ছে, সামনে গ্যাসের দাম বাড়বে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, দাম এখন বাড়বে না। আগে সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল প্রতি দু-এক মাস অন্তর অন্তর গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়বে। আমাদের এক বছর কয় মাস হয়ে গেলো, আমরা কিন্তু এখনো বিদ্যুতের দামও বাড়াইনি, গ্যাসের দামও বাড়াইনি।