গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ারর্দী উদ্যানে দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে আজ বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে ‘মার্চ ফর গাজা’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম সকল রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সর্বস্তরের মানুষ এক কাতারে এসে ফিলিস্তিনী জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করবেন। এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের খতীব মুফতি আব্দুল মালেক।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে মার্চ ফর গাজায় আগতদের জন্য গেট ও রাস্তা ব্যবহারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দুপুর ২টায় পাঁচটি পয়েন্ট থেকে মার্চ শুরু করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েতের সময় বিকেল ৩টা।
গতকাল শুক্রবার এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে এক ঘোষণাপত্রে তারা জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় অবৈধ দখলদার ইসরাইলের পক্ষ থেকে চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে আজ বিশ্বের বিবেকবান মানুষ সোচ্চার। ছয় শত কোটি মানুষের চোখের সামনে একটি ভূখণ্ডে প্রতিনিয়ত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো হচ্ছে অবর্ণনীয় সহিংসতা- যেখানে নারী ও শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। বিমান হামলায় ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ মৌলিক অবকাঠামো। অথচ ৫৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, ওআইসি এবং তাদের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক শক্তিও এ মানবিক সঙ্কট মোকাবেলায় এখনো সক্রিয় কোনো উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থ।
এই প্রেক্ষাপটে, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বজুড়ে শান্তিপ্রিয় মানুষেরা রাজপথে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বাংলাদেশেও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের উদ্যোগে গাজায় চলমান নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
পথ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আজ দুপুর ২টায় পাঁচটি পয়েন্ট থেকে মার্চ শুরু করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণোজমায়েতের সময় বিকেল ৩টা। স্টার্টিং পয়েন্ট ১ : বাংলামোটর। প্রবেশপথ : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা গেইট (শাহবাগ হয়ে)। স্টার্টিং পয়েন্ট ২ : কাকরাইল মোড়। প্রবেশপথ: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেইট (মৎস্য ভবন হয়ে)। স্টার্টিং পয়েন্ট ৩ : জিরো পয়েন্ট। প্রবেশপথ : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি গেইট (দোয়েল চত্বর হয়ে)। স্টার্টিং পয়েন্ট ৪ : বকশীবাজার মোড়। প্রবেশপথ : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি গেইট (শহীদ মিনার হয়ে)। স্টার্টিং পয়েন্ট ৫ : নীলক্ষেত মোড়। প্রবেশ পথ : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি গেইট (ভিসি চত্বর হয়ে)।
বিশেষ নির্দেশনাসমূহে বলা হয়েছে, টিএসসি মেট্রো স্টেশন এদিন বন্ধ থাকবে। সকল পরীক্ষার্থীর জন্য সকল রাস্তা বিশেষভাবে উন্মুক্ত থাকবে। পরীক্ষার্থীদেরকে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়া এবং যেকোনো প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা নেয়ার অনুরোধ রইলো।
সাধারণ দিক নির্দেশনা, ১. অংশগ্রহণকারীরা নিজ দায়িত্বে ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পানি, ছাতা, মাস্ক সাথে রাখবেন এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখবেন।
২. যেকোনো পরিস্থিতিতে ধৈর্য ও শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।
৩. রাজনৈতিক প্রতীকবিহীন, সৃজনশীল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করুন। শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহনের মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
৪. দুষ্কৃতকারীদের অপতৎপরতা প্রতিহত করতে সক্রিয় থাকুন। প্রতিরোধ গঠনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণ করুন।
পরিবার, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের সাথে নিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। আগামী প্রজন্মকে ফিলিস্তিনের মানুষের যন্ত্রণার কথা জানানো, যাতে তারা শিখে কিভাবে মানবতা ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে পারে।