প্রায় বিশ বছর পর আবারও ঢাকা শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) বৈঠক। আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে এই নবম বৈঠক। সর্বশেষ জেইসি বৈঠকটি হয়েছিল ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, একইভাবে ঢাকাতেই।

এবারের বৈঠকে অংশ নিতে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয়কমন্ত্রী আহাদ খান চিমা ঢাকা সফরে আসছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এই জেইসি বৈঠককে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি সম্ভাবনাময় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পাকিস্তানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত বছরের আগস্ট থেকে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তারই অংশ হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা জোরদার করা হচ্ছে। এবারের বৈঠকে মূলত ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সরাসরি সহযোগিতার দিকগুলো আলোচনায় আসবে। পাশাপাশি কৃষি, আর্থিক সেবা, ব্যাংকিংসহ কয়েকটি খাতেও পারস্পরিক সহায়তা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকে পাকিস্তানের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়ে প্রস্তাব দেওয়া হবে। বিশেষ করে চা, পাটজাত পণ্য, ওষুধ, তৈরি পোশাক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী এসব পণ্য বেশি করে রপ্তানির সুযোগ চাওয়া হবে। এতে করে দুই দেশের বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আহাদ খান চিমার এই সফরটি হবে চলতি বছরে বাংলাদেশে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে চতুর্থ মন্ত্রী পর্যায়ের সফর। এর আগে পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। এরপর বাংলাদেশ সফর করেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার। জেইসি বৈঠকের একদিন পর, ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ইসলামাবাদ সফরে যাবেন। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের আমন্ত্রণে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে। সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।