রাজধানীর মৌচাক এলাকায় সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্কিংএ থাকা প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে উদ্ধার দুজনের লাশ নোয়াখালীর চাটখিলে তাদের গ্রামে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। তারা হলেন-চাটখিলের খিলপাড়া ইউনিয়নের লটপটিয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে জাকির হোসেন (৩০) এবং রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোমাতলী গ্রামের প্রয়াত আব্দুল হাকিমের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৫)। এর মধ্যে জাকির প্রাইভেট কারটির চালক ছিলেন এবং মিজানুর ছিলেন তার বন্ধু। এর আগে রাত ৮টার দিকে ঢাকা থেকে তাদের লাশ বাড়িতে নেওয়া হয়। তাদের মৃত্যুর খবরে স্বজনদের আহাজারিতে গ্রামে শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তাদের দুজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা স্বজনদের।

জাকিরের স্বজনরা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য তিনি একটি ‘আদম বেপারী’ চক্রকে টাকা দিয়েছিলেন, কিন্তু তাকে তারা পাঠায়নি। টাকা ফেরত চাইলে উল্টো ‘হত্যার’ হুমকি দিয়েছিল। তার সঙ্গে মিজানুরকেও এই চক্রটি হত্যা করে থাকতে পারে বলে স্বজনদের ধারণা।

সোমবার রাজধানীর মৌচাক এলাকায় সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্কিংয়ে থাকা প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে মৃত অবস্থায় জাকির ও মিজানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বেলা পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা গাড়ির ভেতর দুজনের লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ বলেছে, তারা রোববার ভোরে হাসপাতালটিতে এসেছিলেন সেখানে চিকিৎসাধীন এলাকার একজনকে বাড়ি নিয়ে যেতে। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার আগেই রোববার ভোরে তারা গাড়িসহ পার্কিংয়ে চলে আসেন। পরের দিন দুপুরে গাড়ির ভেতরে লাশ মেলে তাদের।

প্রাইভেট কারের চালক জাকিরের ভাই শাহাদাত হোসেন দাবি করেন, পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার আদম বেপারী ফজলু ও ফেনীর সুমনসহ ৮ জনের একটি চক্রকে জাকির আমেরিকা যাওয়ার জন্য ১৯ লাখ টাকা দেন। কিন্তু অনেকদিন পেরিয়ে গেলেও তারা কথা অনুযায়ী জাকিরকে আমেরিকা নিতে পারেনি এবং তার টাকাও ফেরত দেয়নি। এ নিয়ে তাদের সাথে (আদম বেপারী) জাকিরের মতবিরোধ চলছিল। এর মধ্যে ‘আদম বেপারী’ চক্র জাকিরকে বেশ কয়েকবার হত্যার হুমকিও দেয়। জাকিরের পরিবারের সদস্যদের ধারণা পাওনা ১৯ লাখ টাকার জন্য খুন করা হয়েছে তাকে (জাকিরকে)।

এদিকে মিজানের বোন তাহমিনা বেগম মনে করেন তার ভাইয়ের কোন শত্রু নেই। জাকিরের সাথে থাকার কারণে মিজানকেও খুন করা হয়েছে। জাকির ও মিজানের এলাকাবাসী তাদের মৃত্যু রহস্য উৎঘাটন করে এর সাথে কেউ জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।