পবিত্র হজ্ব পালনের বিমানের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে বিমান মন্ত্রণালয়। নিজেরা নিজেদের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করলে তা কমানো সম্ভব নয়। এ জন্য টেন্ডার আহবানের মাধ্যমে হজের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হলে অনেক কমে আসবে। আর তাতে হজের ব্যয়ও অনেক কমছে বলে মনে করছেন হজ এজেন্সী মালিকদের সংগঠন হাব এর সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারোয়ার।
দৈনিক সংগ্রাম এর সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাতকারের বিস্তারিত নিন্মে তুলে ধর হালো।
হজের ব্যয় অনেক বেশি। হজের এ ব্যয় কিভাবে কমানো যেতে পারে। এ প্রশ্নের জবাবে হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরোয়ার বলেছেন, হজের টিকিটে ভাড়া অনেক বেশি। বিমান ভাড়া কমানো গেলে হজের খরচ কমানো যাবে। এ জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা প্রয়োজন। বিমান মন্ত্রণালয় নিজেরা হজের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ না করে টেন্ডারের মাধ্যমে বিমান ভাড়া করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
বিমানের টিকিটের দাম সর্ম্পকে হাব সভাপতি বলেন, হজে গমনের জন্য বিমানে টিকিটের দাম অনেক বেশি। বিমান ও সৌদিয়া এয়ার লাইন্স হাজী বহন করে থাকে। আর টিকিটের দাম নির্ধারণ করে বিমান মন্ত্রণালয়। নিজেরা নিজেদের টিকিটের দাম নির্ধারণ করলে তা ন্যায্য হয় না। সৌদিয়া এয়ারলাইনসহ সৌদি আরবের আরো এয়ারলাইন্স রয়েছে। টেন্ডার আহবান করলে তারা সবাই অংশ গ্রহণ করে সর্বনিন্ম যে মূল্য আসবে সেটি নির্ধারণ হবে। তাতে টিকিটের দাম অনেক কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
এজেন্সীপ্রতি হাজী কোটার বিষয়ে তিনি বলেন, এজেন্সী প্রতি হজযাত্রীর কোটা গত বছর থেকেই এক হাজার হয়ে গেছে। এটি সৌদি সরকার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে করেছে। এজেন্সীগুলো একটি লিড এজেন্সী নির্ধারণ করে কাজ করবে। এক্ষেত্রে সকল এজেন্সীই কাজ করতে পারবে। নিজেরা মিলে কাজ করলে তেমন কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয় বলে তিনি মনে করেন।
সৌদি সরকার এ বছর মডার্ন হজ ব্যবস্থাপনা নামে এক ধরনের ব্যবস্থপনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে হাবের পক্ষ থেকে সভাপতি বলেন, মডার্ন হজের বিষয়ে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বেশকিছু প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে হাজীগণ নিজেরা বাস নিতে পারবে। আবার ভালো ভালো খাবার দেয়ার জন্য ক্যাটারিং সার্ভিসটির দায়িত্ব তারা নিতে চায়। এক্ষেত্রে খাবারের খরচ বেড়ে যাবে। ফলে হজের খরচ আরো বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য আমরা এ ব্যবস্থাপনাকে নাকচ করে দিয়েছি।
হজযাত্রী প্রতারিত হওয়ার বিষয়ে হাব সভাপতি বলেন, প্রতারণা থেকে বাঁচতে হলে হজযাত্রীগণ যাতে এজেন্সী ছাড়া কোন ধরনের মধ্যস্বত্তভোগীদের সাথে লেনদেন না করেন। এজেন্সীগুলো ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়ে কাজ করে। লাইসেন্স আছে। তারা কিছু করলে ধরার সুযোগ আছে। কিন্তু মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের মাধ্যমে প্রতারিত হলে তার প্রতিকার করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এ জন্য সরাসরি হজযাত্রীগণকে এজেন্সীর সাথে যোগাযোগ করে লেনদেন করার জন্য তিনি আহবান জানান।
হজ ও ওমরাহ মেলা সর্ম্পকে তিনি বলেন, হজ ও ওমরাহ মেলার লক্ষ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ব কমানো। হজযাত্রীদের সচেতন করা। তারা যাতে এজেন্সীগুলোর সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় বিষয় জেনে হজের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ জন্য একছাদের নিচে তিনদিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন ব্যাংকসহ ১৫৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহণ করেছে। মানুষের মধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। মেলায় এসে এজেন্সীগুলোর সাথে আলোচনা করে বুকিং দিতে পারছেন।