ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিতে যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ২২ রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে পৌঁছেছে। চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনের অনুমোদন দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে সংস্থাটি। ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা জানান, গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ২২টি দল মাঠ পর্যায়ে দলের কার্যক্রম আছে কি-না, নিবন্ধন শর্ত পালন করেছে কি-না তা আমাদের যাচাই-বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। আমরা এখন প্রতিবেদনগুলো চূড়ান্তভাবে যাচাই-বাছাই করে কমিশনে উপস্থাপন করব। এরপর কমিশন অনুমোদন দেবেন এই ২২ দলের মধ্যে কোন দলকে নিবন্ধন দেবেন আর কোন দলকে দেবেন না।
ইসির ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের শর্ত পালন করা দলগুলোর বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এরপর কোনো দলের বিষয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি-আপত্তি পাওয়া গেলে তা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আপত্তিকারীর শুনানি গ্রহণ করবে ইসি। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো দাবি-আপত্তি না পাওয়া গেলে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন আবেদন চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দিয়ে গেজেট প্রকাশ ও নিবন্ধন সনদ প্রদান করবে সংস্থাটি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ২২টি দলের বিষয়ে জেলাভিত্তিক তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছি। ৬৪ জেলায় যার যে এরিয়া রয়েছে, সে ভিত্তিতে প্রতিবেদন দেবে। এরমধ্যে কিছু রিপোর্ট পাইপলাইনে আছে, কিছু রিপোর্ট আসছে।
প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে থাকা ২২টি দল- ফরওয়ার্ড পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)–সিপিবি (এম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদশাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সল্যুশন পার্টি এবং নতুন বাংলাদেশ পার্টি।
এদিকে নাম নিবন্ধন শর্ত পালনে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ১২১টি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন না-মঞ্জুর করেছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে ইসির উপসচিব মাহবুব আলম শাহ জানান, প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়া ১২১টি দলকে তাদের নিবন্ধন আবেদন ‘না-মঞ্জুর’ করার বিষয়টি নিষ্পত্তি করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত কারণ তুলে ধরার পাশাপাশি নিবন্ধন শর্ত পূরণ না করার কারণ সুনির্দিষ্টভাবে চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের তালিকা ওয়েবসাইটেও দেওয়া হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়াও কোনো দলের কেউ পূর্বে সংসদ সদস্য থাকলে বা পূর্বের নির্বাচনের পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়া নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়মকানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে এসব নিয়মকানুনগুলোই সাধারণত খেয়াল করা হয়।