নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এরমধ্যে ৬ জনকে মিরপুর মডেল থানা এবং ১২ জনকে গ্রেফতার করে দারুস সালাম থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ছয়জন হলেন- পাবনার সুজানগর পৌর যুবলীগের সভাপতি ও সুজানগর উপজেলা ছাত্রলীগের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জুয়েল রানা (৩৫), চট্টগ্রাম মহানগরের এজিএস ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী আল নমান সাইফ (২৯), চট্টগ্রাম জেলা যুবলীগের সক্রিয় কর্মী মো. জুলহাস (২৬), ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ইমন হোসেন খান মানিক (২৫), আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী মো. সাগর হোসেন (২৭) ও আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী মো. ওহিদুল ইসলাম সুমন (৩৩)।
মিরপুর মডেল থানার বরাত দিয়ে তালেবুর রহমান বলেন, দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ মিরপুর হার্ট ফাউন্ডেশনের সামনে অবস্থানকালে গোপন সংবাদ পায় যে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের কয়েকজন সদস্য মুখে মাস্ক পরে মিরপুর মডেল থানাধীন পাইকপাড়া ডি-টাইপ স্টাফ কোয়ার্টারের ১ নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তায় জড়ো হয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছে এবং সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে। এ খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে পাইকপাড়া জি-টাইপ স্টাফ কোয়ার্টারের ১ নম্বর গেটের সামনে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্র এজাহারভুক্ত আসামিসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের অজ্ঞাতপরিচয়ের ৩০-৪০ জন সদস্য মুখে মাস্ক পরে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে পালাতে শুরু করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয় এবং অন্যরা কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতার ৬ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতির অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন, নাটোর জেলার বড় বড়াই গ্রামের যুবলীগের সক্রিয় সদস্য আল আমিন (৩২), আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য আক্কাস মিয়া (৫২), চাঁদপুর সদর ১২ নং চন্দ্রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক সোহাগ মাঝি (৩৮), আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য নেছার মিয়া (৪৮), ইউসুফ আলী (৪৮), ফারুক হোসেন (৪৭), মকবুল মৃধা (৫৪), মানিক মিয়া (৩৮), মো. শাহীন (৫০), মো. নাঈম (২৫), এমদাদুল হক (৩৭) ও আব্দুল আলীম (২২)।
ডিএমপির মুখপাত্র ও মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার ১২ জনসহ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মী বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৩ টার দিকে দারুস সালাম থানার টেকনিক্যাল মোড়ে জড়ো হয়ে ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে এরকম সংবাদ পাওয়ার পর থানার টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাৎক্ষণিকভাবে ১২ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকিরা সটকে পড়ে। গ্রেপ্তারকৃত ১২ জন এবং ঝটিকা মিছিলের আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছেন তালেবুর রহমান।