সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় “বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগত সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ: এলডিসি উত্তরণের মসৃণ প্রক্রিয়া, অগ্রাধিকার, ধাপসমূহ এবং মধ্যম-আয় ফাঁদ এড়ানোর কৌশল” বিষয়ক উচ্চ-পর্যায়ের একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। আলোচনায় উন্নয়ন অংশীদার, কূটনৈতিক মিশনের, অর্থনীতিবিদ, বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা এবং খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। তারা এলডিসি বিষয়ে প্রতিযোগিতা রক্ষা এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহারিক ও সমন্বিত পদক্ষেপ চিহ্নিত করার বিষয়ে আলোচনা করেন। উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, বিশেষত বিদেশি মিশন ও উন্নয়ন সংস্থা থেকে প্রাপ্ত সহায়তা, কীভাবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগত দুর্বলতা দূরীকরণ, সহায়তা কাঠামো পুনরায় সমন্বয় এবং পরবর্তী সময়ে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা গঠনে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে মনোযোগ তৈরি করা।

অনুষ্ঠানে বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক, এবং সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ডঃ সেলিম রায়হান; অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর; সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর বিশিষ্ট ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান; কনসালট্যান্ট ও পলিসি এডভাইজার মোহাম্মদ পারভেজ ইমদাদ; ওয়ার্ল্ড ব্যাংক-এর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ নাজমুস সাদাত খান; ইউএনডিপির ডেমোক্র্যাটিক গভর্ন্যান্স এর সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক; এডিবি-এর জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিক কর্মকর্তা বরুণ কুমার দে; দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন-এর চিফ স্ট্র্যাটেজি ও লিগ্যাল এডভাইজার মাইকেল কিম ম্যাককুয়ি এবং কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর ডেপুটি হেড অফ মিশন বাইবা জারিন এবং সিজিএস-এর প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক পারভেজ করিম আব্বাসী। আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা বৈদেশিক সহায়তা জাতীয় কৌশলগুলোর সাথে কীভাবে সামঞ্জস্য করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন, বিশেষ করে প্রতিযোগিতা, শিল্প উন্নয়ন এবং রপ্তানি বৈচিত্র্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে।

এছাড়াও আলোচনায় চিহ্নিত করা হয় কোন খাতগুলোতে এলডিসি-নির্দিষ্ট সুবিধা বাদ যাওয়ার পরও উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে এবং অংশীদারদের কীভাবে সরকারি সংস্থার সাথে সমন্বয় বৃদ্ধি করতে হবে। বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি লক্ষ্য করেন যে, সুনির্দিষ্ট সংস্কার এবং সহায়তা প্রয়োজন, যা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর টেকসই বৃদ্ধির সক্ষমতা জোরদার করবে। বিদেশি উন্নয়ন অংশীদার ও কূটনৈতিক মিশন তাদের সহযোগিতা কাঠামো, আর্থিক সহায়তা কৌশল এবং অ্যাডভোকেসি পরিকল্পনা সামঞ্জস্যের উদ্যোগের কথা জানান, যা বিশেষ করে বাণিজ্য সুবিধা হারানো এবং ঋণ ব্যয়ের বৃদ্ধি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে। আলোচনায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শক্তিশালী সমন্বয়, নিদির্ষ্ট সংস্কার কার্যক্রম এবং জাতীয় অগ্রাধিকার ও বৈদেশিক সহায়তা কাঠামোর মধ্যে সামঞ্জস্যের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

অনুষ্ঠানটি সিজিএস-এর বিস্তৃত কার্যক্রমের অংশ, যা বাংলাদেশের মসৃণ ও টেকসই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনকে সহায়তা করার জন্য প্রমাণভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং নীতি সংলাপের অংশ।