প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন দৃশ্য ও অদৃশ্য বহু ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। বাইরে থেকে এসব চ্যালেঞ্জের পূর্ণ রূপ বোঝা সম্ভব নয়, তবে কমিশন সেগুলো মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং এর পথে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে। তবে আমি সবসময় ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করি। নেগেটিভ কোনো চিন্তাভাবনা আমার মধ্যে নেই এবং আমি কোনো কিছু নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চাই না।
গতকাল শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের সচিব বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সিইসি বলেন, এই নির্বাচন একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই আমাদেরকেও বিশেষভাবে এটি মোকাবিলা করতে হবে। বিশেষ ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করেই নির্বাচনকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি সম্প্রতি কানাডায় ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে প্রবাসীদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসাহ চোখে পড়ার মতো ছিল। ভোট দেওয়ার প্রতি তাদের আগ্রহ অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি করেছে। তিনি আরো বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টে যে শপথ নিয়েছি, সেটি আজ আপনাদের কাছে হাওলা করে দিলাম। এই শপথ রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। তবে সেটি নির্ভর করবে আপনাদের ওপর। আপনারা যদি আপনাদের শপথ রক্ষা করেন, তাহলে আমরাও আমাদের শপথ রক্ষা করতে পারব। তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো দলীয় প্রভাবের অধীনে কেউ কাজ করবেন না। নির্বাচনের মাননির্ভর করে নির্বাচনের পেছনে কাজ করা মানুষের সততা ও দায়িত্বশীলতার ওপর। যন্ত্রপাতি বা লজিস্টিক সাপোর্ট যতই দেওয়া হোক না কেন, যদি মানুষ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ তার বক্তব্যে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। আর এই দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কর্মকর্তারাই মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন। তিনি বলেন, নির্বাচন একটি পবিত্র আমানত। যদি আমরা এটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হই, তবে এর জবাবদিহিতা কেবল দুনিয়াতেই নয়, আখেরাতেও করতে হবে। সূরা নিসার অষ্টম আয়াত আমাকে প্রতি মুহূর্তে এই দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
রহমানেল মাছউদ বলেন, মানুষের মধ্যে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এক অর্থে বলা যায়, দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। এখন ভালো নির্বাচন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের জন্য, জাতির জন্য আমাদের একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতেই হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন। এতে নির্বাচন কমিশনারবৃন্দ ও ইসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।