পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব ও সংকট নিরসনে সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদন ৮ মাসেও দাখিল হয়নি। এর ফলে পেশাগত সমস্যা সমাধান না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনে পক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, সরকারের লিখিত আশ্বাসে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-পিবিএস সিস্টেম সংস্কারে দীর্ঘদিনের চলমান আন্দোলন গত ৫ জুন স্থগিত করা হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে গত ১৭ জুন আরইবি-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো কোম্পানি গঠনের সুপারিশ প্রণয়ন এবং সব চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মীদের নিয়মিতকরণ, মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল, সব সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তকৃত এবং অন্যায়ভাবে বদলিকৃতদের পদায়নের লক্ষ্যে পৃথক দুটি কমিটিও গঠন করা হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, আন্দোলন স্থগিতের প্রায় দুই মাস পার হলেও অপেক্ষাকৃত সহজ এবং স্বল্প সময়ে নিষ্পত্তিযোগ্য বিষয়গুলোর কোনো অগ্রগতি নেই। যেমন- মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, লাইনক্রুদের হয়রানিমূলক বদলি স্থগিতসহ সব হয়রানিমূলক বদলি আদেশ পুনর্বিবেচনা, সাময়িক বরখাস্ত ও সংযুক্তদের পদায়ন, চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিতকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

এছাড়া, আন্দোলনের সময় কর্মস্থলে যোগদান করতে না পারা ৫ জন লাইনক্রুর বিষয়টিও নিষ্পত্তিহীন রয়েছে। স্বল্প সময়ে সমাধানযোগ্য বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য গত ১৯ জুন এবং ১ জুলাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও ফলপ্রসূ সমাধান পাওয়া যায়নি। যা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি দীর্ঘ আট মাসেও প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এছাড়া সহজে নিষ্পত্তিযোগ্য বিষয়গুলোর সমাধান না হওয়ায় অনিয়মিত শ্রমিকদের চাকরি নিয়মিতকরণ কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও চরম হতাশা বিরাজ করছে। বিরাজমান অবস্থায় কর্মী অসন্তোষ হ্রাস এবং সমিতির কর্মপরিবেশ স্থিতিশীল করতে অপেক্ষাকৃত সহজ এবং স্বল্প সময়ে সমাধানযোগ্য বিষয়গুলো চলতি মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে অনুরোধ করেন তারা।

একই সঙ্গে হয়রানির উদ্দেশ্যে আরইবির ছয় ধরনের অডিটিং বন্ধ করে স্থায়ী সংস্কারের আগে আরইবি ছাড়া সরকারি অন্যান্য অডিট চলমান রাখার অনুরোধ করেন তারা। অন্যথায়, মাঠ পর্যায়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।