# নিহত বেড়ে ৩১, হাসপাতালে ১৬৫, আশঙ্কাজনক ১৫ শিশু

# ২০ লাশ হস্তান্তর, ৬ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি

# বিএমইউর ইমার্জেন্সি সার্জারি বিভাগ খোলা ২৪ ঘণ্টা

# আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ

১. # বিধ্বস্ত বিমানটি প্রশিক্ষণ নয়, যুদ্ধবিমান ছিল: আইএসপিআর

নাছির উদ্দিন শোয়েব: রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দগ্ধদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী। ঘটনার পর থেকে তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে । এরই মধ্যে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় আরও ১১ জন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে মোট নিহত হয়েছে ৩১ জন। অন্তত ১৬৫ জন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক হবে। যারা মারাত্মক আহত হয় তাদেরকেই কেবল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর কেউ কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

গতকাল দুপুর সোয়া ২ টায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আহতদের বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)সহ নিকটস্থ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৮ জন, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪৬ জন, ঢাকা মেডিকেলে ৩ জন, ঢাকা সিএমএইচ-এ ২৮ জন, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে ১৩ জন, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে ৬০ জন, উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে এক জন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক জন, ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে দুই জন ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে তিন জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানায় আইএসপিআর। নিহতদের মধ্যে ১০ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে, এক জন ঢাকা মেডিকেলে, ১৬ জন ঢাকা সিএমএইচ-এ, দুই জন উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে, এক জন উত্তরা আধুনিক হসপিটালে এবং এক জন ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানায় আইএসপিআর। সংস্থাটি জানায়, এই অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গভীরভাবে মর্মাহত। হতাহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও সার্বিক সহায়তায় তারা তৎপর রয়েছে। বিমান বাহিনী প্রধান সরকারি সফরে বিদেশ থাকায় তার অনুপস্থিতিতে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। এছাড়া সেনাপ্রধান, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সামরিক বাহিনী এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব এবং ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে বলে আইএসপিআর জানায়। আইএসপিআর জানায়, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটে আশঙ্কাজনক ১৫ : জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন ৪৪ জন ভর্তি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বর্তমান পরিস্থিতি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি। ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, এখন বার্ন ইনস্টিটিউটে যারা ভর্তি আছে। তাদের বেশিরভাগই শিশু। বিকেলে সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) থেকে দুজনকে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, আহতদের মধ্যে আইসিইউতে আছেন ৮ জন। এর মধ্যে ৪ জন ভেন্টিলেশনে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন ১৫ জন। আর ২ জনকে কেবিনে দেয়া হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক বলেন, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সোমবার চিকিৎসা কাজ ব্যাহত হয়। এখনও অনেক মানুষ ভিড় করছেন। হাসপাতালে রোগীর কম স্বজন আসতে অনুরোধ জানিয়ে তিন বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সব সাপোর্ট পাচ্ছি। অন্য কোনো সাপোর্ট প্রয়োজন নেই আমাদের।’

২০ লাশ হস্তান্তর, ৬ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি: মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২০ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক মো. সায়েদুর রহমান ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে পৌঁছেছে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৬৫ জন। এ পর্যন্ত ২০ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ছয় জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সময় দগ্ধ শিশুদের জন্য সবার কাছে দোয়া চান সায়েদুর রহমান। তিনি হাসপাতালে ভিড় না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন। সায়েদুর রহমান জানান, নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন আছে মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার শিকারদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে, যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে। তাদের বেশিরভাগেরই শরীরের বড় একটি অংশ দগ্ধ হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি তাদের বাঁচিয়ে রাখার।

এদিকে আহতদের চিকিৎসায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বিএমইউ-এর ট্রান্সফিউশন মেডিসিন, ল্যাবরেটরি ও ইমার্জেন্সি সার্জারি বিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এছাড়াও, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, আমরা দ্রুত সাড়া দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি। রক্ত সরবরাহ থেকে শুরু করে জরুরি অস্ত্রোপচার পর্যন্ত সব ধরনের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এদিকে, দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিমানবাহিনীর একাধিক টিম। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল, এবং যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ: এদিকে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করবে সরকার। দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় সরকার সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় আহতদের যেন সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া কোনো হাসপাতাল যদি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয় বা সক্ষম না হয়, সে ক্ষেত্রে রোগীদের দ্রুত জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট কিংবা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর সরকারের এই পদক্ষেপে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিধ্বস্ত বিমানটি প্রশিক্ষণ নয়, যুদ্ধবিমান ছিল: উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি প্রশিক্ষণ বিমান ছিলো না। এটি ছিলো একটি যুদ্ধবিমান। গতকাল মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এক বার্তায় আইএসপিআর জানায়, একটি ছোট ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন কিছু কিছু গণমাধ্যম লিখছে যে, গতকালের (সোমবার) বিমানটি একটি প্রশিক্ষণ বিমান ছিল। বিনয়ের সঙ্গে আবারও জানাতে চাই, এটি একটি যুদ্ধ উপযোগী যুদ্ধবিমান ছিল; যা একটি প্রশিক্ষণ মিশনে অংশ নিচ্ছিল। সোমবারদুপুর ১টায় উড্ডয়নের পর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানটি আছড়ে পড়ে এবং একটি ভবনে আঘাত হেনে আগুন ধরে যায়। বিধ্বস্ত বিমানটিতে একমাত্র পাইলট ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম সাগর। এরআগে এক বার্তায় আইএসপিআর জানিয়েছিল, কুর্মিটোলাস্থ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় বিমানটি। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের দোতালা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়।

অনভিপ্রেত ঘটনা, যা জানাল সেনাবাহিনী : উত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনাকালে সেনাসদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদফতরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘২১ জুলাই ২০২৫ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১টা ১৮ মিনিটে রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিরীহ নাগরিক হতাহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকটবর্তী ক্যাম্প থেকে সদস্যরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বিতভাবে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করতে তৎপরতা চালানো হয়। উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে দুর্ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ব্যাপক ভিড় দেখা দেয়, যা ইভাকুয়েশন ও রেসকিউ কার্যক্রমকে বারবার ব্যাহত করে। সেনাবাহিনীর সদস্য এবং মাইলস্টোন স্কুলের স্বেচ্ছাসেবকরা বারবার অনুরোধ করলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ঘটনাস্থল ত্যাগ না করায় সময়মতো আহতদের সরিয়ে নেয়া অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে, প্রাণহানির ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। সেনাসদস্যরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সাথে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই উদ্ধার কার্যক্রমে নিয়োজিত ১৪ জন সেনাসদস্য শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালীন, বিকেলের দিকে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কিছু উৎসুক জনতা ঘটনাস্থল ত্যাগ না করায় উদ্ধার কাজে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে, একদল উৎসুক জনতার সাথে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়, যা একপর্যায়ে একটি অনভিপ্রেত ঘটনার অবতারণা করে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা জনগণের পাশে থেকে পেশাদারিত্ব ও সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধের সাথে কর্তব্য পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

উল্লেখ্য, সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার উত্তরার কুর্মিটোলাস্থ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এ কে খন্দকার ঘাঁটি থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির মুখে পড়ে (যার বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে)। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটি উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়।