“ফাতওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ” গ্রন্থের বঙ্গানুবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটি মোট ২৭ খণ্ডে অনূদিত হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। গতকাল সোমবার আগারগাঁওস্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে আয়োজিত “ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ সংক্রান্ত নীতিমালা নির্ধারণী” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, “অনুবাদ কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল। এক্ষেত্রে আক্ষরিক অনুবাদের পরিবর্তে যথার্থতা ও সময়োপযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলা ভাষায় ফাতাওয়া দারুল উলূম দেওবন্দের প্রাঞ্জল অনুবাদ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আঃ ছালাম খান।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ডের গভর্নর আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ নেসারুল হক, সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ও মাওলানা মাহফুজুল হক। এছাড়া বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা আব্দুল মালেক, দেশের বিশিষ্ট অনুবাদকবৃন্দ এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালকবৃন্দও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, “ফাতাওয়া দারুল উলূম দেওবন্দ” শুধুমাত্র ফিকহি জ্ঞানের সংকলন নয়; এটি মুসলিম সমাজের জীবনব্যবস্থা ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ দলিল। তাই অনুবাদের ক্ষেত্রে ভাষাগত উৎকর্ষ ও বিষয়বস্তুর মৌলিকতা রক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

সেমিনারে সিদ্ধান্ত হয় যে, অনুবাদকদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশেষ যোগ্যতার বিবেচনা করা হবে। অনুবাদকদের ইসলামী জ্ঞানে সুদৃঢ় পটভূমি এবং ভাষাগত দক্ষতা থাকতে হবে। একইসাথে নিরীক্ষক দলের মাধ্যমে প্রতিটি খ-ের অনুবাদ যাচাই ও সম্পাদনা করা হবে যাতে সঠিক ব্যাখ্যা এবং প্রাসঙ্গিকতা বজায় থাকে।

অনুষ্ঠানে অনুবাদের সময়কাল, বাজেট এবং কার্যপরিকল্পনা সম্পর্কেও প্রাথমিক আলোচনা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক জানান, প্রকল্পটি ৩ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অনুবাদের পাশাপাশি প্রতিটি খ-ে ব্যাখ্যামূলক টীকা সংযোজনেরও প্রস্তাব করা হয়।

সেমিনার শেষে দেশবরেণ্য আলেম, গবেষক ও অনুবাদকদের মতামতের ভিত্তিতে একটি কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। সবাই আশা প্রকাশ করেন যে, এই অনুবাদ কর্মসূচি ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং সাধারণ মানুষের কাছে ইসলামের গভীর জ্ঞান সহজবোধ্য ভাষায় পৌঁছে দেবে।