“ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : তরুণ আলেমদের ভাবনা” শীর্ষক এক গোলটেবিলে দেশের বিশিষ্ট আলেমরা বলেছেন, বাংলাদেশ কারা শাসন করবে তা বাংলাদেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। অন্য কোন দেশ সেটা নির্ধারণ করার কেউ না। তাই বিভাজন নয়, এখন প্রয়োজন ঐক্য ও মূল্যবোধনির্ভর রাজনীতির চর্চা । ইসলাম হলো মানবিকতা, নৈতিকতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের আহ্বান। গতকাল রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স রুমে জুলাই জোটের উদ্যোগে “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : তরুণ আলেমদের ভাবনা” বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জুলাই জোটের সদস্য মাওলানা মাবরুরুল হক, এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন জোটের অন্যতম সদস্য মাওলানা জামিল সিদ্দিকী। সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট গবেষক ও রাষ্ট্রচিন্তক মাওলানা মূসা আল হাফিজ । তিনি বলেন, ইসলাম ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো কর্মসূচির নাম নয়। ইসলাম হলো মানবিকতা, নৈতিকতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের আহ্বান।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, জাতি আজ এক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক ইভেন্ট নয়, বরং দীর্ঘ ১৮ বছর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত জনগণের ন্যায্য অধিকার পুনরুদ্ধারের এক ঐতিহাসিক সুযোগ।

তারা বলেন, , ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছেন জাতির ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠ কখনো ব্যর্থ হয় না। তাই বিভাজন নয়, এখন প্রয়োজন ঐক্য ও মূল্যবোধনির্ভর রাজনীতির চর্চা।বক্তারা তরুণ আলেম সমাজের প্রতি আহ্বান জানান আপনারা হোন বিভাজনের হাতিয়ার নয়, ঐক্যের সেতুবন্ধন। আবেগের অনুসারী নয়, বিবেকের আলোকবর্তিকা। প্রান্তিক রাজনীতির শিকার নয়, বরং মূল্যবোধনির্ভর নেতৃত্বের নির্মাতা।

বক্তারা বলেন, একদিকে রাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা যেমন স্পষ্ট, অন্যদিকে দ্বীনের বিকৃতি ও নীতিবিচ্যুতিকে ধর্মের নামে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টাও একটি বাস্তব চ্যালেঞ্জ। এই প্রেক্ষাপটে আলেম সমাজকে “ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া” হিসেবে তাদের প্রকৃত ভূমিকা পালনে অগ্রণী হতে হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ওয়ালাী উল্লাহ আরমান, মাওলানা সালেহ আহমাদ আজম, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল ফারুক, আবিদুল ইসলাম খান, লেখক ও গবেষক মাওলানা ইফতিখার জামীল, এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা আশরাফ মাহদী ও যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা সানাউল্লাহ খান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক, মাওলানা মুর্শিদ সিদ্দিকী, যুব মজলিসের সভাপতি মাওলানা জাহিদুজ্জামান, জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ, ছাত্র মজলিসের সাবেক সভাপতি মাওলানা বেলাল আহমাদ চৌধুরী, মাওলানা তানজিল আমীর, মাওলানা জাওয়াদ আহমাদ, মাওলানা সাব্বির আহমাদ, মাওলানা তকী হাসান, জুলাই জোটের নেতৃবৃন্দের মধ্যে মাওলানা সাইফুল্লাহ তামিম, মাওলানা আনাস বিন ইউসুফ, মাওলানা সাজিদ আব্দুল্লাহ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা ইকরামুল মারজান চৌধুরী, মাওলানা ইমরুল শাহেদ, মাওলানা রশিদ আহমাদ তকী,

বৈঠকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে তোলা হয়, কীভাবে নির্বাচনে ধর্মীয় ও মতাদর্শিক বিভাজন এড়ানো সম্ভব? তরুণ আলেম সমাজ কীভাবে ঐক্যের ও মূল্যবোধনির্ভর রাজনীতির নেতৃত্ব দিতে পারে? কীভাবে উন্নয়ন ও নৈতিকতার সমন্বয়ে আধুনিক ও আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়া যায়?

বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে উচ্চারণ করা হয়, আমরা বিভাজনের নয়, ঐক্যের রাজনীতি চাই।আমরা ক্ষমতার নয়, মূল্যবোধের রাজনীতি চাই। আমরা চাই একটি আধুনিক, আত্মমর্যাদাশীল, নৈতিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ।