সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুলের দুই ভবন ও জমি জব্দের আদেশ
দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার পরিবার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের ২৬টি বিও অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। শেয়ার হিসেবে এসব অ্যাকাউন্টে ৫৭৬ কোটি ৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩০ টাকা রয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানজির আহমেদ এ তথ্য জানান।
এদিন দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান এসব বিও অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার পরিবার এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন, সিআইডি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায় যে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিও হিসাবসমূহ নগদায়নসহ অর্থ অন্যত্র স্থানান্তর/হস্তান্তর করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। বর্ণিত বিও হিসাবসমূহ নগদায়ন বা অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর/স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমগ্র ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সেকারণে বিও হিসাবসমূহ নগদায়ন বা অর্থ উত্তোলন বন্ধ করার জন্য অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা একান্ত আবশ্যক। শুনানি শেষে বিচারক এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন।
সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুলের দুই ভবন ও জমি জব্দের আদেশ: ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের রেলমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিমের দুটি ভবন ও ৫০ শতাংশ জমি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের উপপরিচালক মোজাম্মিল হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। সংস্থার সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য দিয়েছেন।
দুদকের আবেদন অনুযায়ী, উত্তরা মডেল টাউন এলাকায় পাঁচ কাঠা জমির ওপর ছয় তলা ভবন ও রাজবাড়ীর পাংশায় ৩০ শতাংশ জমির ওপর তিন তলা ভবন রয়েছে জিল্লুল হাকিমের। এছাড়া পাংশা এলাকায় তার ৫০ শতাংশ জমি রয়েছে। আবেদনে বলা হয়, সরকারি অর্থ ‘আত্মসাৎ করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিল্লুল হাকিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তিনি ঢাকা, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তকালে এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের বরাতে দুদক বলছে, জিল্লুল হাকিম তার এসব সম্পত্তি ‘অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত’ করার চেষ্টা করছেন। এসব সম্পত্তি হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়ে যাবে। এজন্য এসব সম্পদ জব্দ করা দরকার বলে মনে করছে দুদক।
অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৭ অক্টোবর জিল্লুল হাকিম, তার স্ত্রী সাঈদা হাকিম ও ছেলে আশিক মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। গত ১৯ জানুয়ারি আদালত তাদের নাম থাকা ২৬ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয়। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ১৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা।