কানাডায় নৌকাডুবিতে বাংলাদেশের এক পাইলট ও এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যবসায়ী হলেন-টিম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব। তিনি বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ছিলেন। অপরদিকে মারা যাওয়া পাইলট হলেন তার বন্ধু বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৮৭ এর ক্যাপ্টেন সাইফুজ জামান গুড্ডু। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি সোমবার ডেনিম এক্সপার্টের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের স্টারজিওন লেকে ঘটনাটি ঘটে। আবদুল্লাহ হিল রাকিব একটি ক্যানো নৌকায় ছিলেন। এসময় ছিলেন তার বন্ধু বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৮৭ বিমানের ক্যাপ্টেন সাইফুজ জামান গুড্ডু এবং তার ছেলে। নৌকাটি উল্টে গেলে রাকিবের ছেলে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও রাকিব ও তার বন্ধু প্রাণ হারান।
আবদুল্লাহ হিল রাকিব ১৯৭১ সালের ২৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবন শুরু করেন একটি বহুজাতিক ক্রয় প্রতিষ্ঠানে। ২০০৯ সালে তিনটি গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল কারখানা নিয়ে টিম গ্রুপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। তার নেতৃত্বে টিম গ্রুপ পরিণত হয় বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পোশাক শিল্প গ্রুপে, যার অধীনে রয়েছে ছয়টি পোশাক ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ কারখানা- ব্রাদার্স ফ্যাশন লিমিটেড, ৪এ ইয়ার্ন ডাইং লিমিটেড, গ্রামটেক লিমিটেড, সাউথ এন্ড সোয়েটারস, মার্স স্টিচ লিমিটেড ও সি.বি.এম. লিমিটেড। টেকসই ও দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক চর্চায় টিম গ্রুপের পথিকৃৎ ভূমিকার পেছনে রাকিবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ। তার দিকনির্দেশনায় গ্রুপটি দেশের পোশাক শিল্পে সবুজ বিপ্লবের অন্যতম অগ্রপথিক হয়ে ওঠে। গার্মেন্টস খাতের বাইরে টিম গ্রুপ ওষুধ, রিয়েল এস্টেট, তথ্যপ্রযুক্তি এবং খুচরা ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং বর্তমানে ৩০ হাজারের বেশি কর্মী এই গ্রুপে কর্মরত রয়েছেন।
এদিকে সাইফুজ জামান গুড্ডুর মৃত্যুতে বাংলাদেশ বিমানের এক শোক বার্তায় বলা হয়েছে, ক্যাপ্টেন মো. সাইফুজ্জামান তার পেশাগত দক্ষতা, দায়িত্ববোধ ও অঙ্গীকার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের জন্য ছিল গর্বের বিষয়। তার এই অকাল প্রয়াণে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলানাইন্স লিমিটেড পরিবার তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায়। তার পরিবারের অভিপ্রায় অনুযায়ী মরদেহ বাংলাদেশে আনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের টরন্টো অফিস কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।