দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের সামনে অপার সম্ভাবনার পথ খুলে দিয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনাদেরকে পৃথিবীর সেরা চিকিৎসক হয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে রেটিনা মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কোচিং আয়োজিত গ্রান্ড সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রেটিনা মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কোচিং প্রধান পরিচালক মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য একুশে পদক প্রাপ্ত বিশিষ্ট গাইনোকোলজিস্ট ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য - অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার ও স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত খ্যাতিমান চিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ২০২৪-২৫ সেশনে রেটিনা থেকে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে চান্সপ্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। গত ১৭ জানুয়ারি এমবিবিএস ও ২৮ ফেব্রুয়ারি ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩৭টি সরকারি মেডিকেলের ৫ হাজার ৩৮০টি আসনের মধ্যে রেটিনা থেকে চান্স পেয়েছে ৪ হাজার ৭৬১ জন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট তৎকালীন সরকার পতনের পর একদল ও এক ব্যক্তির প্রেমে পড়ে বাংলাদেশকে সাজা দিতে চেয়েছিল ভারত। তখন ভারত বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তখন তারা ভিসা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
মেডিকেল শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদেরকে পৃথিবীর সেরা চিকিৎসক হতে হবে এ জন্য বাংলাদেশিদেরকে আর যেন চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে না হয়, বরং ভারতের লোকজন বাংলাদেশে চিকিৎসার জন্য আসবে- আমরা সেই রকম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। এমন সময় আসবে বাংলাদেশ চিন্তা করবে ভারতের রোগীদের চিকিৎসা দিবে কিনা। তবে আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের চিকিৎসকরা খুবই মানবিক। ফলে কোনো অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসা দিবে না এমন কথা কখনো বলবেন না।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এমন চিত্র দেখে কেউ স্থির থাকতে পারে না। ফলে দুই দিন আগে ঢাকার সমাবেশে সারা দেশের মানুষের ঢল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির বিরাজ এক নজীর স্থাপন করেছে।
আমার দেশ সম্পাদক আরও বলেন, অতীতে পৃথিবীর যেখানেই গণহত্যা চালানো হয়েছে সেখানেই চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। ফিলিস্তিনেও ইহুদিবাদী ইসরাইল চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করছে। সেখানে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো থেকে রোগীরা প্রাণভয়ে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু সিনিয়র চিকিৎসকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের পেশাদায়িত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, মানব যন্ত্রণা লাঘবের চেয়ে বড় কোনো মানবসেবা হতে পারে না। তাই আপনাদের সামনে সেই মানবসেবা করার সুযোগ রয়েছে। তাই আপনাদেরকে সেরা চিকিৎসক হয়ে মানবসেবার পাশাপাশি বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে হবে।
অনুষ্ঠানে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কথা বলতে গিয়ে তিনি শিক্ষাজীবনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও বুয়েটের আবাসিক হলের পাশাপাশি অবস্থান ও তখনকার উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সম্পর্কের বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন।