অবিলম্বে দিল্লি থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। শেখ হাসিনাকে ট্রাইবুন্যাল কর্তৃক ফাসির দন্ড দেওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানান এনসিপির শীর্ষ নেতারা। এর মধ্যে এসসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথাযথ ভূমিকা ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমরা শুনেছি যে, সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারত সফর করছেন। আমরা আশা করব এবং দাবি জানাব যে, তিনি শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, বরং জুলাই-আগস্টের ভিক্টিম হিসেবে বিচারের রায় ও তা কার্যকর দেখতে চাই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আজকের রায়ে ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনাকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে এই রায়ের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, শেখ হাসিনা শুধু ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং দল ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এই গণহত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন। ফলে আওয়ামী লীগও দল হিসেবে এই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার শুরু করতে হবে।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় চালানো গণহত্যার দায়ে পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার জন্য মৃত্যুদ-ই উপযুক্ত বিচার। এক ভিডিও বার্তায় আখতার হোসেন বলেন, এই রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার করা সম্ভব হবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রায় সরকারকে কার্যকর করতে হবে। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খুনি শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় না দিয়ে এদেশের বিচার ব্যবস্থার কাছে সোপর্দ করুন। শেখ হাসিনার রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে এ বিশ্বে একটা নজির তৈরি হবে।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা শুধু উস্কানিমূলক বক্তব্যই দেননি, তার বিচারের রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি মানুষকে গুলী করে হত্যা করেছেন। লিথ্যাল ওয়েপন ব্যবহার করেছেন, গোটা বাহিনীকে মানুষ হত্যা করতে ব্যবহার করেছেন। মানুষকে তিনি পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। তিনি নৃশংস একজন খুনি। তার এত এত অপরাধের অল্প কিছু অভিযোগেই তার শাস্তি ঘোষণা হয়েছে। তার বাকি সব অপরাধেরও বিচার হবে। এই গণহত্যাকারীদের বিচার কার্যকরের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে একটা নজির সৃষ্টি হবে। যাতে করে আর কোনো শাসক ও গোষ্ঠী যেন গণহত্যাকারী হয়ে উঠতে না পারে। শুধু রায় ঘোষণা নয়, এই রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে শহীদের আত্মা শান্তি পেয়েছে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দল হিসেবেও আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের আগে যদি তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা যায়, তাহলে মানুষ মনে শান্তি নিয়ে নির্বাচনে যেতে পারবে। যে কোনো উপায়ে দেশে ফিরিয়ে এনে নির্বাচনের আগে রায় কার্যকর করার দাবি জানাই।