দেশের অর্থনীতিতে গণতন্ত্রায়ন বিএনপির অন্যতম লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শুধু রাজনীতিতে গণতন্ত্র আনলে চলবে না।দেশের অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করতে হবে।।অর্থনীতির গণতন্ত্রায়ন বিষয়টা হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নাগরিক এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের অংশীদার হতে হবে, তার অংশ থাকতে হবে, তার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। আপনি কোনো গোষ্ঠিকে পৃষ্ঠপোষকতা করে অর্থনীতি চালানো যাবে না।অর্থনীতি সকলের জন্য হতে হবে। প্রত্যেকটি নাগরিক যাতে এই অর্থনীতিতে অংশ গ্রহন করতে পারে, উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করতে পারে..যে জন্য বিএনপির আরেকটা শ্লোগান হচ্ছে, অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করা।মূলত যেটা জিয়াউর রহমান সাহেব করে গিয়েছেন। এখন আমরা প্রতিষ্ঠানিক রুপ দিতে চাই।

আমীর খসরু বলেন, সেজন্য আমরা দেশের কামার-কুমার থেকে শুরু করে, তাঁতী থেকে শুরু করে, শিক্ষিত যারা আছেন সকলে যাতে এই অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করতে পারে তার জন্য আমরা(বিএনপি) পরিকল্পনা গ্রহন করেছি। মহিলাদেরকে যাতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করাতে হবে, এমনকি যারা অবসরে গেছেন তাদেরকেও আমরা কাজে লাগাতে চাই। অর্থাৎ প্রত্যেকটি নাগরিক যাতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে, বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে তার ভূমিকা রাখতে পারে। এই অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সকলের জীবনযাত্রার মান যখন বাড়বে তখনই তারা সুনাগরিক হয়ে উঠবেন। তারা সকলে ট্যাক্স দেবেন.. এই ট্যাক্সের টাকা দেয়ার কারণে সে দাবি করতে পারবে আমার ট্যাক্সের টাকায় এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না, আমার ট্যাক্সের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতে হবে। সুতরাং নতুন বাংলাদেশের যে প্রেক্ষাপট আমরা সকলে মিলে করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদেরকে কিছু কিছু জায়গায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আবার প্রত্যেকটি দলের নিজস্ব ভাবনা আছে সেটাকেও চলতে দিতে হবে। মুক্ত চিন্তার পরিবেশ আমাদেরকে অবশ্যই রাখতে হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ জন অধিকার পার্টির উদ্যোগে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। পরে জুলাই অভ্যুত্থানে যোদ্ধাদের সন্মাননা প্রদান করা হয়।

পরিবর্তন আনতে হবে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে, একটা পর একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে যেতে হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া হচ্ছে কারেকশন প্রসেসৃ এটা করেকট করে, জনগনের কাছে আবার যেতে হবে, আবার যেতে হবেৃ এটা যদি মাথায় থাকে তাহলে আপনি জনগণের পক্ষে থাকবেন। তাহলে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন হয়। আর দ্বিতীয় কোনো পন্থা নেই। যারা অন্য কোনো পন্থার কথা চিন্তা করছেন তারা অগণতান্ত্রিক চিন্তার মধ্যে ডুবে গেছেন এবং এটা বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর অবস্থা আগামী দিনে নিয়ে আসবে। সুতরাং সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সাংবিধানিক রাজনৈতিক অধিকারের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যেন জনগণের জন্য কাজ করে, রাজনৈতিকভাবে যেন পরিচালিত না হয় এগুলো আমাদের মানতে হবে।

বাংলাদেশ জনঅধিকার পার্টির সভাপতি ইসমাইল সম্রাটের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, আম জনতার দলের তারেক রহমান, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহ আলম, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিকীসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।