আজ বুধবারের মধ্যে হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির না করা হলে আত্মসমর্পণের নিদের্শ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তামিম বলেন, যদি উনারা (হেফাজতে থাকা কর্মকর্তারা) কালকে হাজির না হন অথবা উনাদেরকে হাজির করা না হয় তবে আইন অনুযায়ী তাদেরকে ট্রাইবুনালে উপস্থিত হওয়ার জন্য দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হবে। একটি তারিখ নির্ধারণ করা হবে ওই দিনেই যেন তারা ট্রাইবুনালে হাজির হন মামলা সম্পর্কে জানার জন্য বা মামলায় এপেয়ার করার জন্য।

পত্রিকার বিজ্ঞপ্তির দিনেও যদি তারা হাজির না হন তবে তাদেরকে পলাতক ঘোষণা করে তাদের পক্ষে একজন স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল এঙ্গেজ করা হবে এবং এই স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল তাদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করবেন। এটা হলো ট্রাইবুনালের বিধান।

তিনি বলেন, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন সাবেক এবং সার্ভিং সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইনফোর্স ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল এবং আজ বুধবার ট্রাইবুনালে ওই মামলা দুটির নির্ধারিত তারিখ আছে। ট্রাইবুনালের অর্ডারশিট থেকে দেখা যায় যে এই তারিখে বলা হয়েছে যে ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশকে অর্ডার দেয়া হয়েছিল যে উনি এই ওয়ারেন্ট অফ অ্যারেস্ট এক্সিকিউট করবেন।

তিনি বলেন, যে সকল আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ্যারেস্টের একটা কপি পাঠানো হয়েছিল। এখন এই আইন অনুযায়ী দুটি কাজ তারা করতে পারেন। একটি হলো যে তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এই ওয়ারেন্ট অফ অ্যারেস্ট সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে ট্রাইবুনালে এসে হাজির হতে পারেন। অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইবুনালে নিয়ে আসতে পারে।

এই দুটির যেকোন একটি হতে পারে। ট্রাইবুনাল আইন অনুযায়ী যদি উনারা হাজির হন অথবা গ্রেপ্তার করে তাদেরকে ট্রাইবুনালে হাজির করা হয় ট্রাইবুনাল চাইলে তাদেরকে জামিন প্রদান করতে পারেন। যদি তারা জামিন চায় এবং জামিনের গ্রাউন্ড থাকে অথবা তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিতে পারেন। যদি জেল হাজতে তাদেরকে পাঠনোর আদেশ দেন তবে কারাকর্তৃপক্ষ যেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সিদ্ধান্ত নিবেন যে তারা কোন কারাগারে থাকবেন।

এই মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রসিকিউশনের উপর কোনো চাপ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন, ইতিমধ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি কারাগারে আছেন। এছাড়াও সাবেক বেশ কয়েকজন মন্ত্রী যারা রাষ্ট্রের উচ্চতর অবস্থানে ছিলেন। এমনকি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মামলা এখানে চলছে। সাবেক অনেক রিটায়ার্ড এবং সার্ভিং আর্মি অফিসারকেও এখানের জুলাই গণহত্যার বা জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিয়মিত এখানে আনা হচ্ছে।

এখানে আসামী কে আমরা সেটা দেখছি না। আমরা দেখছি যে আইন কি বলছে। আইন একজন অভিযুক্তকে যতটুক সুবিধা দিতে বলেছে প্রসিকিউশন পূর্ণ সুবিধা দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।