আজ ১৩ আগস্ট, বুধবার সাংবাদিক, মেধাবী রাজনীতিক ও সাবেক মন্ত্রী জননেতা আনোযার জাহিদের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৮ সালের এই দিনে তিনি ইন্তিকাল করেন।
আনোয়ার জাহিদ ছাত্রজীবনে নিখিল পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ছাত্রলীগের ঝিনাইদহ মহকুমার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে ঝিনাইদহে ছাত্রআন্দোলন গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি এনডিপি গঠন করেন।
১৯৭৮ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন ও ঘোষণাপত্র তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন এবং ৭ দলীয় ও ৪ দলীয় জোট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আনোয়ার জাহিদ সাংবাদিক এবং সাংবাদিকদের নেতা হিসেবেও অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। ১৯৫৬ সালে দৈনিক ইত্তেহাদের সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে অর্ধ সাপ্তাহিক ধূমকেতুর সহকারী সম্পাদক, ১৯৫৯ সালে দৈনিক সংবাদের সহকারী সম্পাদক, ১৯৬০ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী সম্পাদক, ১৯৬৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার সম্পাদক, ১৯৬৬ সালে ইংরেজি সাপ্তাহিক হলিডের উপ-সম্পাদক, ১৯৭০ সালে সাপ্তাহিক গণবাংলা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক, ১৯৭২ সালে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি পিপলসের বার্তা সম্পাদক ও বাংলাদেশ টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক ইনকিলাবের উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬২, ৬৩, ৬৪, সালে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজ) সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৫ ও ৬৬ সালে সহ-সভাপতি, ১৯৭৮ ও ৮৩ সালে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে হবে : ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পরও দেশের রাজনীতি আজও পথহারা বলেই মরেন হচ্ছে। দুর্নীতি আর দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে ২০২৪এর গণআন্দোলন সেই দুর্নীতির মহাউৎসব থেকে জাতি এখনো মুক্তি পায় নাই। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কলহের কারণে আবারো রাজনীতি জনগনের আস্থা হারিয়ে ফেলছে। সুবিধাবাদি আর লুটেরারা আবারো রাজনীতির নিয়ন্ত্রনের ভুমিকায় অবতির্ণ হচ্ছে। গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে এর মাঝেই আনোয়ার জাহিদের দেখানো পথে রাজনীতিতে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন জাতির কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না। জুলাই আন্দোলনের ফথ ধরেই বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
গতকাল মঙ্গলবার মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর অনুসারী প্রখ্যাত রাজনীতিক, প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও সাবেক মন্ত্রী জননেতা আনোয়ার জাহিদের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘উজান স্রোতের যাত্রী জননেতা আনোয়ার জাহিদও শেষ জীবনে শিকার হয়েছিলেন তথাকতিথ ক্ষত রাজনীতির। সুস্থ ও মেধাভিত্তিক রাজনীতির এক ধ্রুবতারার নাম আনোয়ার জাহিদ। নীতিহীন রাজনীতির যুগে তিনি ছিলেন অনুস্মরণীয় ও অনুকরণীয়। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সাথে ভদ্রভাষায়ও যে ভিন্নমত প্রকাশ করা যায় তার জলন্ত দৃষ্টান্ত ছিলেন।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘মরহুম আনোয়ার জাহিদ ছিলেন সংগ্রামী জাতীয়তাবাদী নেতা ও দেশপ্রেমিক । এক সময়ের খ্যাতিমান সাংবাদিক। তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কঠোর সমালোচনা করলেও কারো সর্ম্পকে কুটুক্তি বা অশ্লিষ শব্ধ ব্যাবহার করতেন না। যা আজকের রাজনীতিতেই ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।’
তারা বলেন, ‘মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়া পরবর্তী জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির স্বার্থক নেতৃত্ব ছিলেন জননেতা আনোয়ার জাহিদ। যখন রাজনীতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে আঙ্গুল উঠানো হয় তখন তাকে উপস্থিত করা যায় সততার দৃষ্টান্ত হিসাবে। নীতিহীন রাজনীতির যুগে তিনি সততা ও মেধাভিত্তিক রাজনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র। কেউ শিকার করুক বা নাই করুক জাতীয়তাবাদী ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তির মাঝে অকল্পনীয় যে ঐক্যের সূচনা হয়েছিল তার রুপকার ছিলেন আনোয়ার জাহিদ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।