বাংলাদেশের জন্য ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এ সিদ্ধান্তের কারণে ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন ঢাকায় দেশটির হাইকমিশনার শিউনীন রশীদ। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনীন রশীদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিস) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ মন্তব্য করেন মালদ্বীপের হাইকমিশনার। ‘মালে থেকে ঢাকা : বাংলাদেশ-মালদ্বীপ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারকরণ’-শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে বিস। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গাউসুল আজম সরকার। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস।
বিস মিলনায়তনে আয়োজিত এই সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্যে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনীন রশীদ বলেন, এটা বাংলাদেশ ও ভারতের একান্ত অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে আমার মন্তব্য করাটা ঠিক নয়। এ প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, মালদ্বীপের ট্রান্সশিপমেন্ট শ্রীলঙ্কার সঙ্গে হয়ে থাকে। তাই ভারতের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহারে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় কোনো প্রভাব পড়বে না। এটা খুবই ছোট একটি বিষয়। হাইকমিশনার বলেন, মালদ্বীপের আর্থ সামাজিক খাতে বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। আমরা সেখানকার সব বাংলাদেশিকে নথিভুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছি। সে অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সেখানে থাকা বাংলাদেশিদের বায়োমেট্রিক দিতে হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ডক্টর নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ- মালদ্বীপ সমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে। ভৌগোলিক ও জীবন যাত্রায় দুই দেশের সামঞ্জস্য রয়েছে। কর্মসংস্থান, বাণিজ্য, পর্যটন, মেরিটাইম সিকিউরিটি খাতে দুই দেশের মধ্যে আমরা সহযোগিতা বাড়াতে চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুল হক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের ঐতিহাসিক সমুদ্র সংযোগ রয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে এখন সরাসরি শিপিং লাইন নেই। এটা চালু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াবে। দুই দেশের মধ্যে অনেক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র রয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে- মৎস্য, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, পর্যটন ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।