ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তায় পুলিশী কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক। ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে জানাতে গতকাল শনিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েদা শাখার প্রধান বলেছেন, ঈদের সময় বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপনী বিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় ডিএমপি সব প্রস্তুতি নিয়েছে। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে আইনশঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মহনগরে চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিপনীবিতান, রেলস্টেশন বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য ডিবির গোয়েন্দা নজরদারী পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা তুলে ধরে রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় প্রতিদিন দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া মহানগর এলাকায় নিরাপত্তার স্বর্থে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ৭১ টি পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে অক্সিলারি ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি মহানগরীর নিরাপত্তায় ডিবির উল্লেখযোগ্য টিম কাজ করে যাচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে বিপনীবিতান, রেলস্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ডিবির কার্যক্রম আরও বেগবান করা হয়েছে। ঈদ শেষে মহানগরবাসী যাতে নিরাপদে ও স্বস্তিতে ফিরতে পারেন এবং কোনও ধরণের বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য ঈদ পরবর্তী সময়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ছিনতাইকারী, চোর, চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন অভ্যাসগত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে ডিবির আটটি বিভাগের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক টিম মহানগরের কৌশলগতস্থানে এই অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশিংয়ের অংশ হিসেবে ডিবির জাল সর্বত্র বিস্তৃত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ডিবি সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। ছোট-বড় যে কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে ডিবি জিরো টলারেন্স নিয়ে তার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সাইবার স্পেস ব্যবহার করে যেকোনো অপপ্রচার রোধ এবং ঈদকে সামনে রেখে জাল টাকা তৈরি ও সরবাহ রোধে ডিবির ‘তৎপরতার’ কথাও বলেন তিনি। ঈদ উপলক্ষ্যে ডিএমপির পোশাকধারী পুলিশ ও ডিবির কার্যক্রমের পাশাপাশি নিরাপত্তা সচেতনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বিপনী বিতানের নিরাপত্তা কর্মীদের ‘ডিউটি জোরদার’ করার পরামর্শ দেন তিনি।
ডিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, পুলিশের পাশাপাশি মালিকপক্ষকে স্ব স্ব মার্কেট ও শপিংমলের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে এবং এলাকায় থানা-ফাঁড়ির সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে। নগরবাসী, ঈদে মহল্লা, বাসা মার্কেটে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে বা সম্ভাবনা থাকলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি, থানা বা ডিবিকে অবহিত করবেন। নাশকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও নিরাত্তার ঝুঁকি সম্পর্কিত যে কোনো তথ্য থাকলে ডিবিকে অবহিত করুন এবং সহায়তা করুন। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় সম্পূর্ণ গোপণ রেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপনাদের যে কোন প্রয়োজনে আপনাদের আস্থার প্রতীক ডিবি সর্বদা আপনাদের পাশে রয়েছে।