ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেছেন, ঢাকার বাইরে থেকে লোকজন ঢাকায় এসে টাকার বিনিময়ে মিছিল করে আবার ঢাকার বাইরে চলে যায়। এসব ঘটনায় অক্টোবর থেকে ৫৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখেছি, হেলমেট ও মাস্ক পরে ভোর বেলায় কিংবা ব্যস্ত সময়ে ককটেল বিস্ফোরণ করা হচ্ছে। ককটেল বিস্ফোরণ করানোর জন্য অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের ব্যবহার করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ঢাকা মহানগরীর চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

সাজ্জাদ আলী বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল গত ১১ দিনে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত দুই দিনে রাজধানীতে ৯টি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। এসব ঘটনায় গত দুইদিনে ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭টি মামলা করা হয়েছে। গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ দুটি দল ও তাদের অঙ্গ-সংগঠন অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য ১৪টি ঝটিকা মিছিল করেছে।

আগামী ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনো আশঙ্কা নেই ও চিন্তার কোনো কারণ নেই। ঢাকাবাসী তৎপরতা রুখে দেবে। ওইদিন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঢাকায় মোতায়েন থাকবেন।

রাজধানীবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কোন অবস্থায় যেন কোনো অপরিচিত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া না হয়। মেস, হোটেল, গেস্ট হাউজে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে বোর্ডার ওঠানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করছি।

এ ছাড়া নিজ নামীয় মোটরসাইকেল বা যানবাহন অন্য কাউকে দেওয়া আগে বা ভাড়া দেওয়ার আগে কোনো দুর্বৃত্তের হাতে চলে যাচ্ছে কি না দৃষ্টি রাখবেন। আপনাদের এলাকায় কোন আগন্তুককে দেখলে বা সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় বা ৯৯৯ এ অবহিত করার অনুরোধ করছি।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কোনোভাবেই আপনাদের যানবাহন অরক্ষিত অবস্থায় রাখবেন না। কেননা গত দুই দিনে যেসব যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, অধিকাংশই রাতে রাস্তায় অরক্ষিতভাবে পার্ক করা ছিল। বাসের নিরাপত্তা দেওয়া জন্য কোনো লোক ছিল না। অরক্ষিত এসব বাসেই তারা আগুন দিয়েছে। আর যেসব বাসে যাত্রী কম, এমন বাস তারা টার্গেট করেছে। যাত্রীভর্তি বাস তারা টার্গেট করেনি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আমরা স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছি। আজকে যারা সুপরিকল্পিতভাবে নাশকতার চেষ্টা করছে, তা প্রতিরোধের জন্য আমরা জনগণের সহায়তা চাই। এদেশের জনগণ, ঢাকাবাসী স্বৈরাচার পতনে ভূমিকা রাখে। যে ধরনের নাশকতা কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে, তাদের প্রতিহত করবে ঢাকাবাসী। আমরা ঢাকাবাসীর সাথে আছি।

এ সময় পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।