রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। গত সোমবার দুপুরে চীনের তৈরি এফটি-৭ বিজিআই মডেলের এ যুদ্ধবিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দেশে গত এক দশকে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকবার। এর কোনোটিতে পাইলট আহত বা নিহত হয়েছেন। কোনোটি বিধ্বস্ত হয়েছে জনবসতি থেকে দূরে। তবে এবারের মতো প্রাণঘাতী যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার নজির সাম্প্রতিক ইতিহাসে নেই।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত এক দশকে একের পর এক প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার পরও মৌলিক পরিবর্তন আসেনি বিমানবাহিনীর বহরে কিংবা নীতিনির্ধারণে। যুক্ত হয়নি আধুনিক যুদ্ধবিমান। পুরনো প্রযুক্তির এয়ারক্রাফট দিয়েই চলছে বাহিনীর কার্যক্রম। বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতির শহর ঢাকায় প্রশিক্ষণ বিমান পরিচালনা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি দায়ী কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি ওঠেছে।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লিখেছেন, কেন জনবহুল এলাকায় যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ চালানো হয় তার জবাব দিতে হবে। এর জন্য দায়ী ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। নিহত ও আহতদের সঠিক পরিসংখ্যান দিতে হবে।

জনবহুল এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনও। তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে বিমান প্রশিক্ষণ কোথায় হবে, তা নতুন করে ভাবতে হবে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশিক্ষণের বিষয়ে সংস্থা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আরও যাচাই-বাছাই করতে হবে।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবাহিনীর সাবেক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিমানবাহিনীর প্রাথমিক ও এর পরের ধাপের প্রশিক্ষণ হয় ঢাকার বাইরে। ঢাকায় কোনো কর্মকর্তা বদলি হয়ে এলে তাকে ঢাকায় থাকা বিমান দিয়ে আবার প্রশিক্ষণ নিতে হয়।

বিমানবাহিনীর সাবেক আরেক কর্মকর্তার জানান, ঢাকায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণগুলো সেভাবে হয় না। বাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণটা হয় যশোরে। এরপর অ্যাডভান্সড ট্রেনিংটা হয় চট্টগ্রামে। কিন্তু ঢাকাতে যে বিমানগুলো আছে কোনো পাইলট এখানে (বদলিজনিত কারণে) এলে পরে তাকে এগুলোতে পাঠানো হয় এবং প্রশিক্ষণ দিতে হয়। যে কর্মকর্তা প্রাণ হারালেন অন্য বিমানে কিন্তু আগেই তার প্রশিক্ষণ হয়ে গেছে।

ঢাকায় বিমানবাহিনী রাখার বিষয়ে বাহিনীর আরেক কর্মকর্তা বলেন, এখন আবেগ কাজ করছে আমাদের। কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য, শুধু আমাদের না, যে কোনো দেশের জন্যই বিমানবাহিনী রাখতেই হবে। কিছুটা প্রশিক্ষণ সব জায়গায় চলবে। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে প্রশিক্ষণের মান বাড়িয়ে আর আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে। তিনি বলেন, আমি যতোটুকু জানি, আমাদের বিমানবাহিনীতে নিরাপত্তার বিষয়ে কখনো আপস করা হয় না। বিমানগুলো পুরোনো হলেও এগুলোর নিরাপত্তার মান বজায় রাখা হয়।

মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য যুবদলের রক্তদান কর্মসূচিতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমানের প্রশিক্ষণ কেন হচ্ছে, বিমানের ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল কি না, কতদিন আগের বিমান, সেটাকে কেন অনুমতি দেওয়া হলো, সেসব প্রশ্ন মানুষের মনে। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে, একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত টিম করে আসল সত্য খুঁজে বের করা।

দেশের এভিয়েশন বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এটিজেএফবির সভাপতি তানজীম আনোয়ার বলেন, এ ঘটনা আমাদের একটি প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে যে ঢাকার মত একটা চরম ঘনবসতিপূর্ণ শহরের মাঝখানে একটা বিমানঘাঁটি প্রয়োজন কতটুকু। দেখুন এর আগেও বাংলাদেশে সামরিক ও বেসামরিক বেশ কিছু প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেই দুর্ঘটনাগুলো জনবহুল এলাকায় না হওয়ায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেছে। আমরা শুনেছি এই বৈমানিকও চেষ্টা করেছিলেন বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যেতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি, জীবন দিয়েছেন তিনিও।

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় উড়োজাহাজ চালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার বিষয়ে জানতে মতামত চাইলে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম প্রথমেই ঢাকার ভেতর বিমানবন্দর থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এত ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় বিমান বন্দর কেন? এখানে তো বিমানবন্দরই থাকার কথা না। তবে প্রশিক্ষণ ফ্লাইটগুলো ঢাকার বাইরে হতে পারে। এটা কক্সবাজারে হতে পারে, যশোরে হতে পারতো, রাজশাহীতে হতে পারতো। কেন ঢাকা?

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল বলছেন, আমি গত কয়েক বছর থেকেই বলে আসছি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরটাকে স্থানান্তর করে শহরের বাইরে নেওয়ার সময় চলে এসেছে। ১৯৬৪ সালে যখন এই বিমানবন্দর তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয় ও পরিকল্পনা করা হয় তখন পাকিস্তানের প্রাদেশিক একটি রাজধানীর বিমানবন্দর হিসেবে এটি বিবেচিত হয়। তখন গুটিকয়েক এয়ারক্রাফট এখানে ওঠানামা করত। আর তখনকার দিনে উত্তরা, টঙ্গী, আশুলিয়ার দিকে কোনো বসতিই ছিল না। এই বিমানবন্দর যখন ১৯৮১ সালে উদ্বোধন হল, তখনও ওই এলাকাগুলোতে সেভাবে বসতি ছিল না। তারপরে যেভাবে জনবসতি বেড়েছে ওইসব এলাকায়, এটাতো এখন উদ্বেগজনক অবস্থা। তিনি বলেন, একটা যাত্রী বিমানে প্রশিক্ষণ বিমানের চেয়ে অন্তত ১০ গুণ বেশি জ্বালানি থাকে, তাতে আগুনও অনেক বাড়ে। যার জন্যে আমরা যদি দেখি পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলো কিন্তু পর্যায়ক্রমে বিমানবন্দরগুলোকে শহরের বাইরে নিয়ে গেছে। থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর সব জায়গায় কিন্তু তারা বিমানবন্দর স্থানান্তর করেছে।

বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত এয়ারভাইস মার্শাল ও দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, আমি ছোট ছোট বাচ্চাদের এমন দুরাবস্থা দেখতে পারছি না। এটা খুব কষ্টদায়ক একটা ঘটনা। এর পরে তিনি তার মতামত দেন, কেন ঢাকায় প্রশিক্ষণ হচ্ছিল তাও ব্যাখ্যা করেন। মফিদুর রহমান বলেন, আমাদের বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণে দুর্ঘটনা প্রতিনিয়তই হয়। আমরা এটার জন্য প্রস্তুত ও অভ্যস্ত। সব দেশেই এটা হয়। যেখানেই বিমান বাহিনীর উড্ডয়ন হবে, আমরা যতটাই, শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করি, তারপরেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং ঘটে। সারা পৃথিবীর সব বিমান বাহিনীতেই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় বৈমানিকরা আহত-নিহতও হন। পাশাপাশি আরও কিছু ক্ষয়ক্ষতি (কো-ল্যাটারাল ড্যামেজ) হতে দেখা গেছে। কিন্তু মাইলস্টোনের ক্ষয়ক্ষতি একেবারেই চিন্তাতিত, অকল্পনীয়। এরকম একটা স্কুলে (বিমান) পড়ে, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক আরও অনেকেই ছিলেন সেখানে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজগুলোতে বেশি সংখ্যক উড্ডয়ন ঘণ্টার রেকর্ডধারী এই বৈমানিক বলছেন, শুধু প্রশিক্ষণ বিমান না। যে কোনো বিমানের জন্যই ওড়ার ও অবতরণের সময়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই উড্ডয়ন ও অবতরণের পথও এজন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা মাটির খুব কাছে থাকে। এই সময় বেশি কৌশল প্রয়োগ করার সুযোগ থাকে না। নিয়ন্ত্রণ থাকে না বৈমানিকের, যে কিছু সমস্যা হলে সরে যাবে। আর গতিও কম থাকে, উচ্চতাও কম থাকে। আর যুদ্ধ বিমান অচল হয়ে গেল তো ঠাস করে পড়ে যাবে। এজন্য বিমান বন্দরগুলোর ওড়ার ও নামার পথে ভবনের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। যখন একটা বিমানবন্দর তৈরি করা হয়, বর্তমান যুগে নগর পরিকল্পনায় ওড়ার ও নামার পথে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এগুলো দেওয়া হয় না। এর একটা কারণ হচ্ছে ঝুঁকি, আরেকটা কারণ হচ্ছে শব্দ।

মফিদুর রহমান বলেন, আমরা শোকাহত, কিন্তু আমাদের যুক্তিনির্ভরও হতে হবে। আপনি দেখেন ভারতে যে উড়োজাহাজটি বিধ্ব্স্ত হল, সেটা কিন্তু খুব উঁচুতে ছিল না। কিন্তু সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই। পাঁচ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ওপরে পড়েছে। আর আমাদের এই উড়োজাহাজটা অবতরণ করতে আসছিল না। এটা, এই উড়োজাহাজে বৈমানিক তৌকিরের প্রথম একক উড্ডয়ন ছিল। তাকে যথেষ্ট প্রশিক্ষণ দিয়েই এতে পাঠানো হয়েছে। এখন তদন্তে বেরিয়ে আসবে কোনো টেকনিক্যাল সমস্যা ছিল, না পরিচালনার। যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি সরাসরি উড়োজাহাজটির অবতরণের পথে নয় তুলে ধরে তিনি বলেন, সরাসরি ওড়া-নামার পথে হলে এটা উত্তরা বা নিকুঞ্জতে এসে পড়তো। এই দুর্ঘটনাস্থলের অবস্থানটা বিমানবন্দর থেকে একটু পশ্চিম-উত্তর দিকে। ওই এলাকাগুলোতে উড়োজাহাজ উড়তে থাকা অবস্থায় অপেক্ষা করতে (হোল্ডিং) যায়।

বিমান বাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তার মতে, রানওয়ে সরিয়ে নিয়ে বা বিমান বাহিনীকে সরিয়ে নেয়ার চিন্তা করলে তো হবে না। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন,ঢাকায় কিন্তু বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণগুলা সেভাবে হয়ও না। বিমান বাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণটা হয় যশোরে। এরপর অ্যাডভান্সড ট্রেনিংটা হয় চট্টগ্রামে। কিন্তু ঢাকাতে যে উড়োজাহাজগুলো আছে কোনো বৈমানিক এখানে (বদলিজনিত) এলে পরে তাকে এগুলোতে পাঠানো হয় এবং প্রশিক্ষণ দিতে হয়। যে কর্মকর্তা আজ প্রাণ হারালেন অন্য উড়োজাহাজে কিন্তু তার প্রশিক্ষণ হয়ে গেছে। উড়োজাহাজ চালানো কিন্তু গাড়ির মত না যে একটা চালাতে পারলেই সব চালানো যায়। এখানে উড়োজাহাজের ধরন পরিবর্তন করলে তাকে একটা নির্দিষ্ট ঘণ্টার প্রশিক্ষণ নিতে হয়, এর একটা সিলেবাস আছে। প্রথমে প্রশিক্ষকের সঙ্গে করতে হয়, পরে তাকে একা উড্ডয়ন করতে হয়। এটাকে অপারেশন ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা বিমান বাহিনীর থাকা না থাকা সার্বভৌমত্বেরও প্রশ্ন, এমন মন্তব্য করে মফিদুর রহমান বলেন, এখন আবেগ কাজ করছে আমাদের কিন্তু আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য, শুধু আমাদের না, যে কোনো দেশের জন্যই বিমান বাহিনী রাখতেই হবে। এবং কিছুটা প্রশিক্ষণ সব জায়গায় চলবে। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে প্রশিক্ষণের মান বাড়িয়ে আর আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে। আমি যতোটুকু জানি, আমাদের বিমান বাহিনীতে নিরাপত্তার বিষয়ে কখনো আপোস করা হয় না। উড়োজাহাজাগুলো পুরনো হলেও এগুলোর নিরাপত্তার মান বজায় রাখা হয়। এসময় অনেকেই দাবি করছেন, বিমান বাহিনীর সক্ষমতা কমে গেছে, যেহেতু নতুন নতুন উড়োজাহাজ কেনা হয় নাই। দেশের আর্থিক অবস্থার কারণেই হয়তো কেনা যায়নি। যেটার প্রক্রিয়া এখন চলছে। কিন্তু আজকের দুর্ঘটনার সঙ্গে যদি এটা মিশিয়ে ফেলি যে এখানে কোনো প্রশিক্ষণ হবে না, এটা ঠিক হবে না। আমি তো সমুদ্রে গিয়ে আকাশে উড়তে পারবো না সব সময়। তাহলে তো এই বিমান বন্দরটিকেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে। এতো হাজার হাজার এয়ারলাইন্স আসছে তাদের তো জায়গা দিতে হবে। আবার বিমান বাহিনীর জন্য যদি আপনি লালমনিরহাটে ঘাঁটি করে দেন তবুও ঢাকাকে রক্ষা করার জন্য কিন্তু কৌশলগত কারণেই কিছু উড়োজাহাজ এখানে রাখতে হবে। এবং এখানে নতুন যে বৈমানিক আসবেন তাকে ওই উড়োজাহাজে প্রশিক্ষণও দিতে হবে।

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে শিক্ষার্থী হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে জনবসতিপূর্ণ শহরে প্রশিক্ষণ বিমান কেন উড্ডয়ন করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, আমার প্রশ্ন হলো যে একটা প্রশিক্ষণ বিমান তাও ফাইটার বিমানের প্রশিক্ষণ এমন একটা জনবসতিপূর্ণ শহরে হয় কি না। আমরা জানি এই ধরনের প্রশিক্ষণ যেখানে জনগণ থাকে না এরকম অনেক জায়গায় থাকে। সেখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কিন্তু এই প্রশিক্ষণ প্রায় এমনি ঢাকা শহরের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হলো কেন?

এদিকে, অ্যাভিয়েশন সিস্টেম পরিবর্তন করে ঢাকাসহ দেশের সব জনবহুল এলাকায় বিমান উড্ডয়নে নিষেধাজ্ঞা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ত্রুটিপূর্ণ বিমান উড্ডয়নে নিষেধাজ্ঞা কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত। এছাড়াও আদালত দেশে বর্তমানে ত্রুটিপূর্ণ বিমানের সংখ্যা কত, কেন তা প্রকাশ করা হবে না এবং ত্রুটিপূর্ণ বিমান রক্ষণাবেক্ষণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চেয়েছেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সোমবার বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৩১ জন নিহত ও ১৬৫ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।