রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি তিনি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেল ৩টায় এক ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি লিখেছেন, মাইলস্টোন কলেজে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় আমরা শোকাহত। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- যেখানে একটি শিশু, কিশোর কিংবা তরুণ তার শিক্ষা, বিকাশ ও নিরাপত্তা নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠে। সেই পরিবেশে এমন ভয়াবহতা কখনো কাম্য নয়। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। এ সময় তিনি বিএনপি নেতা-কর্মী ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তারেক রহমান আরও বলেন, এই দুঃসময়ে আমাদের জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে।
এদিকে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিকেলে তিনি বার্ন ইউনিটে পৌঁছে আহতদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় বিমান প্রশিক্ষণ নেবে, এটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। সোমবার বিকেলে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা কার্যক্রম দেখতে এসে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ এলাকাটা ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে প্রশিক্ষণ বিমান দিয়ে উড্ডয়ন শিখবে, এটা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়। এটা বিস্তীর্ণ প্রান্তরে হতে পারে। যশোর, কক্সবাজারের মতো জায়গায় হতে পারে। সেখানে পাশে সমুদ্র আছে, বিস্তীর্ণ জায়গা আছে।
তিনি বলেন, নেভিগেশন বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আমি অবশ্যই জানব না। কিন্তু সাদা চোখে যেটা মনে হয়েছে, চারদিকে এত বাড়িঘর, মানুষ থইথই করছে, এর মধ্যে একটা প্রশিক্ষণ বিমান প্রশিক্ষণ নিতে পারে না। এটা নিয়ে প্রশাসন, সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। দায়িত্বে অবহেলা করলে প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন বিপন্ন হতে থাকবে।
রিজভী বলেন, দুর্ঘটনা বলেকয়ে আসে না। এটা হতে পারে। কিন্তু আমরা যদি আগাম প্রস্তুতি রাখতে পারি, বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত। আমার মনে হয়, যেসব লোকালয় গড়ে উঠেছে, তা পরিকল্পনার অংশ নয়। এত ঘনবসতি এই এলাকায় হতে পারে না। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে কাউকে দোষারোপ নয়, সবাই যদি সবার দায়িত্ব পালন করে তবে অকালে কারও মৃত্যু হতো না।
রিজভী জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা রক্তের জোগান দেওয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতা করছে।