দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিঙ্গাপুর থেকে এই এক কার্গো এলএনজি আনতে ব্যয় হবে ৫৩১ কোটি ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৪৫ টাকা।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো (২৮-২৯ জুলাই ২০২৫ সময়ে ৩২তম) এলএনজি আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

পেট্রোবাংলা থেকে এই ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিল করা ৫টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।

দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি’র (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনি¤œ দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের ভাইটল এশিয়া প্রাইভেট লিমেটেড থেকে এই এক কার্গো এলএনজি আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ’র দাম ধরা হয়েছে ১২.৬২ মার্কিন ডলার। এতে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৩১ কোটি ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৪৫ টাকা।

এদিকে দেশের সারের চাহিদা মেটাতে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার টাকা দিয়ে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ থেকে এ সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, শিল্প মন্ত্রণায় থেকে ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার টাকা ব্যয় ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব দেওয়া হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তাতে অনুমোদন দেন। প্রতি মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৯৭ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।

বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে ‘সাতক্ষীরা-সখিপুর-কালীগঞ্জ এবং কালীগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-ডব্লিউপি-০৩ এর পূর্তকাজের ক্রয়ের অনুমোদন চাওয়া হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি সেটিও অনুমোদন দিয়েছে।

জানা গেছে, এ প্রকল্পের পূর্তকাজ ক্রয়ের জন্য এক ধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দাখিল করা ৪টি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনি¤œ দরদাতা প্রতিষ্ঠান মো. মঈনুদ্দিন (বাঁশি) লি. প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১০৬ কোটি ৮৮ লাখ ৩৫৪ টাকা।

বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে দুটি প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়, এ দুটি প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এর একটি প্রস্তাবে ‘বাপবিবোর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগ)’ (বিশেষ সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নং- এমসিইপি/বিআরইবি/ডিএমডি-ডব্লিউ-২, লট-১ এর আওতায় ১৪৪ কোটি ৯৪ লাখ ৭০ হাজার ২৭ টাকা ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘বাপবিবোর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগ)’ (বিশেষ সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-এমসিইপি/বিআরইবি/ডিএমডি-ডব্লিউ-২, লট-২ এর আওতায় ১৪৩ কোটি ২৩ লাখ ৮৩ হাজার ২৫১ টাকা ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।