নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা থামছেই না। এক মাসের বেশি সময় ধরে চালের দাম চড়া, কমার কোনো লক্ষণ নেই। এর মাঝে বৈরী আবহাওয়ায় বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। কাঁচা মরিচের দাম এখনো ২০০-২৪০ টাকা কেজি। এছাড়া আগের সপ্তাহ থেকে কিছুটা বাড়তি ব্রয়লার মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। তবে দীর্ঘ সময় ধরে স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে রয়েছে ডিম ও অন্যান্য বেশ কিছু মুদিপণ্য।

গতকাল শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, এক কেজি লম্বা বেগুন কিনতে ৯০ থেকে ১০০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। করলা, উস্তা, বরবটির দামও ৮০ টাকা কেজি চাওয়া হচ্ছে। কচুর লতি ও কচুমুখী, যা কি না বর্ষার সবজি হিসেবে পরিচিত, কিন্তু এর দামও ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। এছাড়া কাকরোল, ঝিঙা, চিচিংগা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ মাসের শুরুর দিকে পটল ও ঢ্যাঁড়সের দাম ছিল মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকা সেটাও এখন কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে, দুই সপ্তাহ আগে টানাবর্ষার সময় বেড়ে যাওয়া কাঁচা মরিচের দাম এখনো সেভাবে কমেনি। প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এ মাসের শুরুতে ছিল ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। এর সঙ্গে সপ্তাহখানেক আগে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ৫০-৫৫ থেকে বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়।

বাজারে প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটোর কেজি ১২০ টাকা, ইন্ডিয়ান গাজর ১৪০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, দেশি শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা। লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩৫০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকায়, চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস, ক্যাপসিকাম ৪০০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা কমে ৬০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির বাজারে সোনালি কক মুরগি ৩১০ টাকা এবং সোনালি হাইব্রিড মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগির কেজি ২৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৬০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, সরবরাহ বাড়ায় গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে ইলিশের কেজি আকারভেদে এক হাজার ২০০ টাকা থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাষের শিংয়ের (আকারভেদে) কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি শিং ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের পাঙাশের কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মলার কেজি ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা এবং পাঁচমিশালি ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর গোশতের কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার গোশত ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির গোশত এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আদা ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন দেশি ১৩০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান ১৮০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকা।

এদিকে, মাস দেড়েক হলো চালের দাম বেড়েছে। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের এক ধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজির রয়েছে, যেটা শুধু ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি সব চালের দাম সাধারণত ৭৫ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।