গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্টার ফর সিভিল রাইট এর উদ্যোগে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনগত ভিত্তি বৈধতা ও মর্যাদা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিচারপতি এ এফ এম আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ডঃ মাহমুদুর রহমান।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও অ্যাপিলেট ডিভিশনের আইনজীবী, বাংলাদেশ সরকারের অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ হুমায়ুন কবির তানিমের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে কি-নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও অ্যাপিলেট ডিভিশনের আইনজীবী ব্যারিস্টার এস এম শাহরিয়ার কবির। এসময় তিনি বলেন,৩৬ জুলাই আত্মত্যাগের মাধ্যমে এই সরকার গঠিত হয়েছে। শুধু নির্বাচিত সরকারই জনগণের সরকার নয় নির্বাচিত সরকার ছাড়াও এই সরকার জনগণের যে সমর্থন পেয়েছে তাতে করে আমরা বলতে পারি এই সরকার জনগণের সরকার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বতীকালীন সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিটির অন্যতম সদস্য- সিনিয়র এডভোকেট ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিক বলেন- জনগণের একটা ক্ষমতা আছে তা হচ্ছে সাংবিধানিক ক্ষমতা যা কখনো নিঃশেষ হয় না। বিভিন্ন পরিস্থিতির বিবেচনায় জনগণ সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে। জনগণ সেই ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমেই এই সরকার গঠন করেছে। সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরে হলেও যেহেতু জনগণের সরকার গঠন করেছে তাই এই সরকার বৈধ। আমাদের কাজ হচ্ছে এই সরকারকে আইনগত বৈধতা দেওয়া, যা আমরা এখনো করতে পারিনি।

মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীব্যারিস্টার আক্কাছ চৌধুরী, ব্যারিস্টার সাজ্জাদ আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ সরকারের অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহিল মারুফ ফাহিম, এডভোকেট আশরাফুল ইসলাম, সাংবাদিক, সংগঠক জাকারিয়া হাবিব পাইলট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, সিনিয়র এডভোকেট মহসিন রশিদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট ডঃ হেলাল উদ্দিন ও সেন্টার ফর সিভিল রাইটস এর আহবায়ক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো: পারভেজ হোসেন।

সেন্টার ফর সিভিল রাইটসের আহবায়ক আইনজীবী মোঃ পারভেজ হোসেন তার স্বাগত ভাষণে এই সংগঠনটি গঠনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন- আমাদের দেশের সংবিধানের যে আইন গুলো পাস হয় তা জনগণের জন্য কল্যাণকর কিনা, জনগণের মৌলিক অধিকার তাতে সংরক্ষিত হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারকে দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য এ প্লাটফর্ম সৃষ্টি করা হয়েছে।

প্রধান অতিথি আমার দেশ সম্পাদক ড.মাহমুদুর রহমান বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না কেননা এই সরকার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গঠন করা হয়েছে। তবে এই প্রশ্ন একারনে আসছে যে, এই সরকার বিপ্লবী সরকার নয় । অন্তর্বর্তীকালীন সরকার না হয়ে বিপ্লবী সরকার গঠিত হলে এই ধরনের বিতর্ক হয়তো আসতো না। এসময় তিনি অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুসের প্রশংসা করে বলেন যে,বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোন সরকার ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পেরেছে।

সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট ব্যারিস্টার আক্কাছ চৌধুরী বলেন, চলমান সরকারের স্ট্যাটাস নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে, যা তার সাধারন কাজকর্ম কে বাধা গ্রস্থ করছে। এই ধরনের বিতর্ক আসলে গ্রহণযোগ্য নয়।

এ সময় এডভোকেট আশরাফুল ইসলাম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে প্রকৃতপক্ষে দৃশ্যমান তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তবে এক্ষেত্রে যে ব্যর্থতা তা মূলত আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতা । এ ব্যাপারে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সরকারের অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহিল মারুফ ফাহিম বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে, সাধারণ জনগণ দেশের ক্রান্তিলগ্নে তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিলুপ্তি সাধন করেছে । কিন্তু আমরা আবার দুর্ভাগ্যবান এ অর্থে যে, আমরা এই আত্মত্যাগের ফলাফল ঘরে তুলতে পারিনি।

জাকারিয়া হাবিব পাইলট বলেন, আমদেরকে বর্তমান সময়ের সমস্যা মোকাবিলা করে সঠিক পথে পরিচালিত হতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।