বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক গত সোমবার আইসিসি বাংলাদেশ কার্যালয়ে আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান এবং নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠক করেন।

আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘদিনের শক্তিশালী ও গতিশীল সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন, যা ঐতিহাসিক বন্ধন, জনগণ-পর্যায়ের গভীর যোগাযোগ এবং দৃঢ় বাণিজ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তিনি যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেন, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে। পাশাপাশি বাংলাদেশের আর্থিক সেবা, জ্বালানি এবং শিক্ষা খাতে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর সক্রিয় উপস্থিতির কথা তুলে ধরেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়নের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও জোরদারের আশা প্রকাশ করেন।

হাই কমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে রপ্তানি বৈচিত্রকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। হাই কমিশনার উল্লেখ করেন যে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি বাজার হিসেবে রয়ে গেছে এবং ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিমের (ডিসিটিএস) আওতায় বাংলাদেশের পণ্যের জন্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত ৯৯.৮% পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান অব্যাহত থাকবে। ২০২৯ সালের পরও বাংলাদেশের ৯২% পণ্য এই স্কিমের আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে, যার মধ্যে তৈরি পোশাক অন্যতম।

ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে হাই কমিশনার উচ্চশিক্ষা, জলবায়ু অর্থায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং বিমান চলাচল খাতের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন ও তাদের পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার সহজ করতে বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন। বৈঠকে আইসিসি বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা দক্ষতা উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি প্রবর্তনে যুক্তরাজ্যের আরও সহায়তার আহ্বান জানান।

বৈঠকে আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এ কে আজাদ ও নাসের এজাজ বিজয় এবং নির্বাহী বোর্ড সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে আব্দুল হাই সরকার, আফতাব উল ইসলাম, আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ), মোঃ ফজলুল হক, মীর নাসির হোসেন, সাঈদ আহমেদ, শওকত আজিজ রাসেল, সিমিন রহমান, ব্যাংকিং কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. (রুমি) আলী, ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. জব্বার এবং আইসিসি বাংলাদেশের মহাসচিব আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তারা হাই কমিশনারের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রতিষ্ঠান-পর্যায়ের সম্পর্ক আরও গভীর করার আহ্বান জানান।