বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের আইন এবং ২০২১ সালের সংশোধনী আইনের পরিবর্তন করে নতুন যে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করেছে, তা অবাস্তব আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই দাবর জানান আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোট।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নতুন যে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করেছে, তা বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে মালিক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, যা পুরো খাত এবং জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টিপু বলেন, নতুন অধ্যাদেশে যে সব সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে, তার অনেকগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিশেষ করে ধারা ৫-এ অন্য এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করলে সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলো টিকে থাকতে পারবে না। দেশে যে পাঁচ হাজার এজেন্সি আছে, তাদের অধিকাংশেরই এয়ারলাইন্স থেকে সরাসরি টিকিট ইস্যুর সক্ষমতা নেই। আর অনলাইন ও অফলাইনের জন্য যে ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা জামানত রাখার কথা বলা হয়েছে, তা ছোট এজেন্সিগুলোর পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ জুমান চৌধুরী বলেন, এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, পরিবারের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক গ্যারান্টি সীমিত থাকার কারণে তারা বড় এজেন্সি থেকে টিকিট সংগ্রহ করে গ্রাহকদের সেবা দেন। এটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানানো হলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার, সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম বাহার, আটাবের সাবেক মহাসচিব আসলাম খান, চিড়ার সাবেক সভাপতি হাবিব আলী, আটাব সংস্কার পরিষদের আহবায়ক গোফরান চৌধুরী, আল মাহমুদ ট্রাভেল্স এর আব্দুল কবির খান, ব্যবসায়ী এম এন এইচ খাদেম দুলাল ও মেজবাহ উদ্দিন সায়েদ।
মানববন্ধন শেষে আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোট সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ে কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে তারা ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০২৫ (সংশোধন) এর অনুমোদিত খসড়া বাতিলের অনুরোধ জানান। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, এই অধ্যাদেশ কার্যকর হলে প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যাবে, যার ফলে মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কর্মহীন হয়ে পড়বে এবং খাতটি মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হবে।