জুলাই বিপ্লবে আমাদের শ্রমিক সমাজের অসামান্য অবদান রয়েছে; তাই অর্জিত বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে দেশে অপশান-দুঃসাশনের অবসান ঘটিয়ে সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে শ্রমিক সমাজকে এক দফায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মাওলানা মহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং মহানগরী সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া। আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহ-সভাপতি মিজানুল হক ও গাজী মাহবুব আলম এবং গুলশান থানা জামায়াতের আমীর মাহমুদুর রহমান আজাদ। এছাড়াও মহানগরীর সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাহী পরিষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সেলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি শ্রমিক সমাজের নায্যঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। মূলত, শ্রমজীবীরাই জাতীয় উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। তাই শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার ও মালিকদের যুগপৎ ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সরকারকে আরো বাস্তবমুখী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। আসন্ন ঈদুল ফিতরে শ্রমিকদের শতভাগ ঈদ বোনাস দিয়ে তাদেরকে পরিবারের সাথে সুন্দরভাবে ঈদে আনন্দে অংশীদার হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি শ্রমিকদের নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার ও মালিক পক্ষকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, হাদিসে রাসূল (সা.)-এ শ্রমিকদের আল্লাহর বন্ধু হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রমিকরা তাদের কর্মের পাশাপাশি আল্লাহর গোলামীতে নিজেদের নিয়োজিত করলে ধনীদের অনেক আগেই জান্নাতে পৌঁছাতে পারবে। মূলত, আল্লাহর আইন ছাড়া পৃথিবীতে কখনোই শান্তি আসতে পারেনা। দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে কোন অপরাধ ও অশান্তি থাকবে না। তাই দেশের সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে মানুষের তৈরি আইন বাদ দিয়ে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে গঠিত রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জনে মনোযোগ দিতে হবে। অপপ্রচার আছে যে, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশ থেকে অসৎ লোকদের বিতাড়িত করা হবে। কিন্তু তাদের কথা সঠিক নয় বরং আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশের সকল নাগরিককে আলোকিত মানুষে পরিণত করা হবে। তিনি সে আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠায় শ্রমিক সমাজকে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

পল্লবীতে জামায়াতের ফুড প্যাকেট বিতরণ: পল্লবী থানা উত্তর জামায়াতের উদ্যোগে সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে ফুড প্যাকেট উপহার প্রদান করা হয়। থানা আমীর মাওলানা সাইফুল কাদেরের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুহাম্মাদ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক, ঢাকা-১৬ সংসদীয় আসনের জামায়াত মনোনীত সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী কর্ণেল (অব.) মুহাম্মদ আব্দুল বাতেন। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজের মেহনতি ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের কারো কাছে হাত পাততে হবে না বরং রাষ্ট্রই সকল মানুষের ঘরে ঘরে তাদের অন্ন-বস্ত্রসহ মৌলিক অধিকার পৌঁছে দিবে। জামায়াত এমন একটি রাষ্ট্র কায়েমের জন্য চেষ্টা করছে। তিনি আল-কুরআনের সমাজ ও দেশকে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান। উল্লেখ্য, প্রোগ্রামে ২০০ পরিবারের নিকট ফুড প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।