বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে ৪ দিন ব্যাপী বাংলাদেশ ইনভেন্টমেন্ট সামিট ২০২৫ ইং এর তৃতীয় দিনে তারা এই আশ্বাস দেয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের সাথে আলাপ করে একথা জানা গেছে। এদিন চায়না, বৃটেন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করেন এবং বিভিন্ন উদ্বেগের কথা জানান। এসময় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার দলের পক্ষে নেতৃত্বে দেন। তিনি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি বিএনপি এবং এনসিপির স্টল ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের স্টলগুলো পরিদর্শন করেন। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অন্যদের মধ্যে কথা বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিজনেস বিভাগের সেক্রেটারি ড. আনোয়ারুল আজীম, সহসভাপতি মো. আনোয়ারুল ইসলাম রাজু ও সদস্য মো. মাসুদ কবির।

অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশের নতুন যাত্রায় বিদেশী বিনিয়োগ আস্থায় আনতে পারলে এবং পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে সবার ত্যাগ এবং স্বপ্ন সার্থক হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে গুড গর্ভনেন্স, সততা, নিষ্ঠা এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অর্থনীতি ও ব্যবসায়িক নীতি প্রনয়ণ করে সর্বাত্বক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

বিদেশী বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠানোগত উন্নয়ন, টেক্সটাইল, কৃষিজ, কেমিক্যাল, শিক্ষা ও মেডিকেল খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। চায়না চেম্বার অব কমার্সের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্টল পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নক্সিকাঁথাসহ অন্যান্য সামগ্রী উপহার দেন।

প্রতিনিধি দলের সদস্য মো. মাসুদ কবির দৈনিক সংগ্রামের সাথে আলাপকালে জানান, বিনিয়োগকারীরা মূলত লং টাইম স্ট্যাবেলিটি চান, তাদের অভিযোগ সময় মতো তারা সহযোগিতা পায় না। এখানে আমলাতন্ত্রের জটিলতা রয়েছে। রেসপন্স কম এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছে। এছাড়া নারীদের ক্ষমতায়নের কথাও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের কাছে জানতে চেয়েছে। অন্যান্য বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে দীর্ঘসূত্রিত, ব্যাংকিং ক্ষেত্রের সমস্যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আস্তাহীন বিনিয়োগের বাধা হিসেবে জানিয়েছে।

চীনের কোম্পানির লোকজন বলেছেন, আমরা সব রাজনৈতিক দলের সাথেই সম্পর্ক রাখতে চাই। সবার সাথেই কাজ করতে চাই। তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। এব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর মতামত জানতে চেয়েছে।

মো. মাসুদ কবির জানান, পতিত সরকারের সময় বিনিয়োগকারীদের দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলেও কোন কোন বিনিয়োগকারী অভিযোগ করেছেন। বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকার কোন কোন বিনিয়াগকারীর সাথে ভাল আচরণ করেছে আবার পছন্দ না হলে তাদের সাথে অসহযোগিতা করেছে।

বর্তমান সময়ে এসে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে তাদের বিনিয়োগের জন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়ার পাশাপাশি গুড গর্ভনেন্স দিবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে, প্রকৃতি, বন্দর, নদী ও বন্দর ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, এগুলোর আধুনিকায়ন করা হলে এবং সময়ক্ষেপনহীনতায় পৌছাতে পারলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।