ইসলামের মূল আক্বিদার অন্যতম স্তম্ভ হজ্বের কল্যাণে তাৎপর্যমন্ডিত ও গৌরবোজ্জ্বল জিলহজ্ব মাসের দ্বিতীয় দিন আজ। জীবনের গুনাহখাতা মাফ চেয়ে শুদ্ধতম হওয়ার বাসনায় দুনিয়ার সামর্থ্যবান মুসলমানরা এই সময়ে কাবা শরীফের দিকে যাত্রা শুরু করে। ইসলামী অনুশাসন ও বিধি বিধানের অংশ হিসেবে প্রতি বছর মক্কায় অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র হজ্ব। এর ধারাবাহিকতায় এবারও আর কয়েকদিন পরই মক্কা নগরীর আরাফাতের ময়দানে পবিত্র হজ¦ পালনকারীদের জমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। আরাফার ময়দানে অবস্থান, খানায়ে কাবায় জিয়ারতসহ কয়েকটি নির্দিষ্ট কর্ম সম্পাদনের নামই হজ্ব। প্রত্যেক আর্থিক ও শারীরিক উভয়ভাবে সামর্থ্যবান মুসলমান নর-নারীর ওপরই কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে হজ্ব ফরজ করা হয়েছে। হজ্ব পালন করার জন্য প্রতি বছর লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান মক্কায় হাজির হন। মহান আল্লাহর নির্দেশ পালন এবং তার সান্নিধ্য লাভের অভিপ্রায়েই গোটা দুনিয়ার মুসলমানগণ মক্কায় সমবেত হয়ে থাকেন। এ বছর ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে হজ¦যাত্রীগণ মক্কায় আসতে শুরু করেছেন।
হজ্ব একটি ফরজ ইবাদাত হলেও নামায রোজার মতো সকলের জন্য ফরজ নয়। যে সব মুসলমানের পক্ষে পবিত্র কাবায় গিয়ে হজ্ব পালন করে ফিরে আসার মতো আর্থিক ও শারীরিক সার্মথ্য আছে, কেবল তাদের ওপর জীবনে একবার হজ্ব ফরজ করা হয়েছে। তবে ঐ ব্যক্তিকে স্বাধীন ও প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। এর পাশাপাশি তার হজ্বে যাওয়ার পথ নিরাপদ হতে হবে। মহিলাদের হজ্ব করতে তার সাথে স্বামী বা মুহরিম ব্যক্তি থাকতে হবে। আর্থিক সামর্থ্য বলতে যা বুঝানো হয়ে থাকে তা হলো হজ্ব যাত্রা থেকে শুরু করে গৃহে ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারের প্রয়োজন পূরণের সামর্থ্য থাকা। আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌঁছার মতো যার সামর্থ্য আছে তার ওপর হজ্ব করা আল্লাহর একটি অনিবার্য হক। অতএব যাদের উপর আল্লাহর নির্দেশিত এই হজ্ব ফরজ হয়েছে, তাদের ফরজ কর্ম সম্পাদনে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। কেননা মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই। হাদীস শরীফে আছে, যে সকল ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্ব পালন করেনি, তারা ইহুদি খ্রিষ্টানদের মতো মৃত্যুবরণ করবে।
হজ্ব পালনের সময় অবশ্যই সহীহ নিয়ত থাকতে হবে। কেননা হজ্বের নিয়ত যদি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য না হয়ে লোক দেখানো ও ‘আলহাজ্ব’ ‘হাজ্বী’ ইত্যাদি উপাধি ধারণ করার জন্য হয়ে থাকে তাহলে হজ্ব কবুল হবে না। বরং প্রদর্শনেচ্ছাকারী হিসেবে পরকালে মহান রাব্বুল আলামিন কঠিন শাস্তি দেবেন। সুতরাং হজ্ব একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করতে হবে।