উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশে দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে শুধু সর্বস্বান্তই হচ্ছেন না, অনেকে জীবন বিপন্ন হচ্ছে। পথে বসেছে বহু পরিবার। ভিটেমাটি বিক্রি করে জীবন বাঁচাতে লাখ লাখ টাকা দিতে হয়েছে দালালদের। ইউরোপের স্বপ্ন দেখে দেশ ছেড়ে লবিয়িায় মাফিয়াদের হাতে অপহৃত হয়ে অনেকের খোঁজও মিলছে না। লিবিয়ার মাফিয়া ও দেশি দালালচক্র মিলে অপহৃত ব্যক্তিদের অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে আদায় করে মোটা অংকের টাকা।
নির্যাতনের অডিও ও ভিডিও দেশে পাঠিয়ে পরিবারের কাছে দাবি করা হয় লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ। প্রিয়জনকে ফিরে পেতে সহায় সম্বল হারিয়ে, ভিটেবাড়ি বিক্রি করে আবারও পাঠানো হয় টাকা। এভাবে দালালের হাতে জিম্মি হয়ে কারো জীবন বাঁচে আবার কারও কোনোদিন আর খোঁজ মেলে না। অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের ইউরোপ যেতে গিয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশি হচ্ছেন নিঃস্ব। আবার অনেকেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকা ডুবে হচ্ছেন নিখোঁজ কিংবা মারা যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়ার তত্ত্বাবধানে এবং লিবিয়ার জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় ত্রিপলি থেকে স্বেচ্ছায় দেশে প্রত্যাবর্তনে আগ্রহী ৩০৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়। এর আগে আরও ৩০৯ জনকে দেশে ফেরানো হয়। আরও চার শতাধিক ব্যক্তিকে ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।
ফিরে আসা কয়েকজন গতকাল শক্রবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের অমানবিক জীবনের কথা তুলে ধরেন। আগে থেকেই অনেকের স্বজন উপস্থিত থাকেন বিমানবন্দরে। এসময় কয়েকজন তাদের দুঃসহ জীবনের কথা বর্ণনা করেন। প্রিয়জনের ফিরে আসায় সেখানে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নাহার নামে এক নারী বলেন-আমি ভেবে ছিলাম ভাই হয়তো আর ফিরে আসবে না। আল্লাহর বিশেষ রহমত সরকারের প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত জীবিত অবস্থায় ভাইকে ফিরে পেলাম। বিমানবন্দরে ফিরে কয়েকজন জানালেন তাদের জীবন-মৃত্যুর গল্পের কথা। একজন বলেন, একদিন মাফিয়াদের কয়েকজন ঘরে ঢুকে গুলী করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ১০ জনকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর আমাদের কাছে ৭৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমদেরকে অমানবিক মারধর করে। নির্যাতনের ভিডিও এবং অডিও গ্রামে পাঠায়। তিনি বলেন, এরপর আমি সাড়ে ৯ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছি। তার দাবি অনুযায়ী এভাবে তার সাথে অন্যরাও বাড়ি থেকে সাড়ে ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা দিয়ে মাফিয়ায়দের কাছ থেকে মুক্তি পায়। অন্য আরেকজন বলেন, রাস্তায় দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন তাকে আটক করে একটি কালো রঙের গাড়িতে তোলে। কিন্তু ওরা গাড়ির দরজা বন্ধ করছিল না। গাড়ি টান দিলে হঠাৎ তিনি চলন্ত গাড়ি থেকে রাফ দিয়ে দৌঁড়ে এক দোকানে গিয়ে ওঠেন। এরপর এতদিন তিনি কোনো রকম পালিয়ে জীবন বাঁচিয়েছিলেন। তারা বলেন, মাফিয়ায়রা নিজেদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে আটক করে নেয়। এরপর কখনো জঙ্গলে, কখনো গুপ্ত এলাকায় নির্জন বাড়িতে আটক করে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। এভাবে আরও বহু বাংলাদেশিকে আটক করে রেখেছে মাফিয়ায়রা। লিবিয়ার মাফিয়ায় ও বাংলাদেশি দালালদের নির্যাতনে অনেকে মারাও গেছে। লিবিয়া থেকে ফেরা বাংলাদেশিরা সবাই একই কলা বলছেন তা হলো-মাফিয়াদের সহযোগীতা করছে বাংলাদেশি দালালরা। মাফিয়াদের সোর্স হিসেবে তারা কাজ করছে। ইউরোপ পাঠানোর স্বপ্ন দেখিয়ে দালালরা লোক সংগ্রহ করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে যায়, এরপর ইতালি না নিয়ে তুলে দেয় লিবিয়ার মাফিয়াদের হাতে। দালালরা লিবিয়ায় নিয়ে কখনো মাফিয়াদের কাছে বাংলদেশিদের বিক্রিও করে দেয়।
ইউরোপের স্বপ্ন দেখিয়ে নিয়ে যায় লিবিয়া: মানবপাচারের শিকার তানজির শেখ দেশে ফিরে জানান, লিবিয়ায় আমাদেরকে দিনের পর দিন বেঁধে রাখা হতো, লোহার রড দিয়ে পেটাতো। নির্যাতনের ভিডিও আমাদের পরিবারকে পাঠিয়ে মুক্তিপণ নিয়েছে তারা। মারা গেছি ভেবে তারা আমাদের মরুভূমিতে ফেলে রেখে গিয়েছিল। কোনেও দিন যে বেঁচে দেশে ফিরতে পারবো, সেটা ভাবিনি। সিলেটের মোশাররফ হোসেন ভাগ্য ফেরাতে বছরখানেক আগে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। আট লাখ টাকা দিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ধরা পড়ে দুই মাস জেল খাটেন। এখন তার সম্বল বলতে শুধু দেশে ফিরে বিমানবন্দরে আইওএমের দেওয়া ৬ হাজার টাকা ও একটি কাপড়ের ব্যাগ। বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে গত ২১ আগস্ট দেশে ফেরা ১৭৪ জনের অভিজ্ঞতা প্রায় একই ধরনের। ইতালি যাওয়ার জন্য দালালকে কেউ দিয়েছেন ১০ লাখ, কেউবা ১৪ লাখ টাকা।
দেশে ফিরে আসা কাওসার জানান, ডিটেনশন সেন্টারে ঠিকমতো খাবার ও পানি দেয় না। দিলেও লবণ পানি খেতে হতো। এতে আমরা অসুস্থ হয়ে যেতাম। পুরো মাসে একবারও বাইরে যেতে দেওয়া হতো না। চার দেয়ালের মধ্যে একটিমাত্র রুমে বন্দি থাকতে হতো।
৭৯ শতাংশই নির্যাতনের শিকার: গত বছর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক লিবিয়া থেকে ফেরত আসা ৫৫৭ জন বাংলাদেশির যাত্রা, গন্তব্য, অর্থ, নিপীড়ন, উদ্ধার থেকে শুরু করে প্রত্যেকের ৫০ ধরনের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানতে পারে— বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে যাদের লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়, তাদের সবাইকে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখানো হলেও তারা চাকরি পান না। উল্টো অধিকাংশকেই লিবিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বন্দি রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদেরকে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে অর্থ। তবে এত কিছুর পরেও ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপের স্বপ্নে লিবিয়া যাওয়ার এই প্রবণতা থামছে না। ব্র্যাকের গবেষণায় দেখা গেছে, ২৬ থেকে ৪০ বছর বয়সী লোকজন সবচেয়ে বেশি ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে ৩১ থেকে ৩৫ বছরের লোকের সংখ্যাই বেশি। এদের বেশিরভাগেরই বাড়ি মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা এলাকায়। লিবিয়া ফেরত ৫৫৭ বাংলাদেশির তথ্য অনুযায়ী, তাদের ৬০ শতাংশের পরিবারকে স্থানীয় দালালরা ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়েছিল। কিন্তু ৮৯ শতাংশই চাকরি বা কোন কাজ পাননি। উল্টো নানা ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছেন। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এভাবে লিবিয়া যাওয়ার পথে ৬৩ শতাংশই বন্দি হয়েছেন। বন্দিদের মধ্যে ৯৩ শতাংশই ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন। তাদের ৭৯ শতাংশই শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর ৬৮ শতাংশই মুক্তভাবে চলাচলের স্বাধীনতা হারিয়েছেন। ৫৪ শতাংশই বলেছেন, তারা কখনও তিনবেলা খাবার পাননি। অন্তত ২২ শতাংশ দিনে মাত্র একবেলা খাবার পেয়েছেন।
দেশে ফিরছেন আরও ৩০৯ বাংলাদেশি: এদিকে বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়ার তত্ত্বাবধানে এবং লিবিয়ার জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনায় ত্রিপলি থেকে স্বেচ্ছায় দেশে প্রত্যাবর্তনে আগ্রহী ৩০৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। প্রত্যাবাসিত এসব অভিবাসী গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এটি লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় পরিচালিত দ্বিতীয় চার্টার ফ্লাইট বলে জানিয়েছে ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস। রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রত্যাবাসিত অভিবাসীদের বিদায় জানান। এ সময় দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. রাসেল মিয়া এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিদায়কালে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস লিবিয়ায় অবস্থানরত অভিবাসীদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে ইচ্ছুক নিবন্ধিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনের জন্য দূতাবাস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় গত ৯ অক্টোবর প্রথম দফায় ৩০৯ জন এবং আজ দ্বিতীয় দফায় আরও ৩০৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত অভিবাসীদের দেশে ফিরে মানবপাচার প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখতে অনুরোধ করেন। তিনি অনিয়মিত উপায়ে বিদেশ যাত্রার ঝুঁকি ও ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে স্থানীয়ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত সবাইকে দালালচক্রের বিরুদ্ধে দেশে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন এবং এ বিষয়ে দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন। মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত আরও বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিক দেশের সম্পদ। তাই ভবিষ্যতে কেউ যেন অবৈধ পথে বিদেশে না যায়।’ বরং বৈধ উপায়ে, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে দেশের সম্মান, মর্যাদা ও উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
তিনি লিবিয়ার জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকার, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস ও লিবিয়া সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ফলেই বাংলাদেশি অভিবাসীদের এই নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশি নাগরিকরা ইতোপূর্বে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার জন্য দূতাবাসে আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে দূতাবাস লিবিয়া সরকারের সহযোগিতায় তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করে এবং অভিবাসীদের অনুকূলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহসহ সব প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। একই প্রক্রিয়ায় আগামী ৩০ অক্টোবর মিসরাতা ও ত্রিপলি থেকে নিবন্ধিতদের মধ্যে অবশিষ্ট আরও তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য লিবিয়া সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বলে জানায় দূতাবাস।
হবিগঞ্জে শোকের মাতম: এরআগে ৩০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার ত্রিপলি থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালির উদ্দেশে যাওয়া চারটি নৌকার মধ্যে একটি ডুবে যায়। সেখানে হবিগঞ্জের ৩৫ তরুন ছিল। যাদের মধ্যে এখনো অনেকের সন্ধান মেলেনি। তাদের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন, বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা তলাবপাড়ার আলফাজ মিয়া রনি, মোজাক্কির আহমেদ, সিয়াম জমাদার, মিজান আহমেদ; শ্রীমঙ্গলকান্দির সাইফুল ইসলাম বাবু, জুবাঈদ মিয়া; আজমিরীগঞ্জের ইমন, পারভেজ, রফিকুল ইসলাম পবলু, হাবিবুর রহমান, সাব্বির, মাহি ওরফে রাহুল, উজ্জ্বল, পিন্টু, নোয়াগড় গ্রামের মোক্তাকির ও রবিউল। এছাড়াও হবিগঞ্জ সদর ও বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন গ্রামের আরও কয়েকজন রয়েছেন। শুধু পশ্চিমভাগ গ্রাম থেকেই নিখোঁজ হয়েছেন ছয় যুবক। প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৭ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নিয়েছিলেন দালাল হাসান আশরাফ। পশ্চিমভাগ গ্রামে সরেজমিন গেলে দেখা যায় পুরো গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া।
নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের বুকফাটা আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। কেউ ছেলের ছবি বুকে নিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন, কেউ আবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। নিখোঁজ সাব্বিরের বাবা আব্দুল ওয়াহেদ জানান, তিন মাস আগে হাসান মোল্লার মাধ্যমে লিবিয়া পাঠাই। পরে বলে, ছেলেকে ইতালি পাঠানো হবে। এজন্য বাড়ির জমি, গরু বিক্রি, এনজিও থেকে ঋণ সব মিলিয়ে ১৮ লাখ টাকা দিয়েছি। এখন ছেলেটার কোনো খবর নেই। তিনি সরকারের কাছে তার ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের আকুতি জানান। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, নিখোঁজ হওয়ার পরও দালাল হাসান আশরাফ ওরফে সামায়ূন মোল্লা তার মানবপাচার চক্রের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।