এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে মোট ২৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার ঋণ ও অনুদান দিচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। এই অর্থ খুলনার সুপেয় পানি সরবরাহ, উত্তর-পশ্চিমের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
গতকাল সোমবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং নিজ নিজ পক্ষে এই সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
খুলনা শহরের সুবিধাবঞ্চিত বাসিন্দাদের কাছে নিরাপদ ও টেকসই উপায়ে সুপেয় পানি পৌঁছে দিতে এডিবি ১৫ কোটি ডলার ঋণ এবং এর সঙ্গে ৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানির লবণাক্ততা সমস্যা মোকাবিলা করা হবে।
এ বিষয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, এই উদ্যোগটি খুলনা শহরের পানি ব্যবস্থাকে জলবায়ু-সহনশীল করে তুলবে এবং প্রায় ১৭.৮ মিলিয়ন মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ করতে সহায়তা করবে। প্রকল্পটি ২০৫০ সাল পর্যন্ত পানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে এবং এতে স্মার্ট জল সরবরাহ ব্যবস্থাপনার মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার মান, দক্ষতা, এবং নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে এডিবি ৯ কোটি ১০ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ বিতরণ নেটওয়ার্কে উন্নত স্মার্ট প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে। এটি দূরবর্তী নদী তীরবর্তী দ্বীপগুলোতে বসবাসকারী নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য বিদ্যুৎ-ভিত্তিক নতুন জীবিকার সুযোগ তৈরি করবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৌর ব্যাকআপ সিস্টেমও স্থাপন করা হবে।
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় সম্প্রদায়কে সহায়তার জন্য এডিবি ৫ কোটি ৮৬ লাখ ডলার অনুদান দেবে। এই অর্থ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয়দের মধ্যে সামাজিক সংহতি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এই সহায়তার মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা প্রকল্পের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে বলে জানান। ২০১৮ সাল থেকে এডিবি এই খাতে সহায়তা দিয়ে আসছে।