নেক্সাস ডিফেন্স এবং জাস্টিস আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা বলেছেন. নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ব্যতীত কোনভাবেই আগামী নির্বাচন করা ঠিক হবে না এবং সঠিক নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের যথাযথ সংস্কারের বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দলেরই ঐক্যমত্য ছিল। নির্বাচন কমিশনের উচিত সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়ন, প্রাপ্ত বয়স্ক সকল তরুণদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা। সেইসাথে বিগত আমলের সকল জাল ও ভুতুড়ে ভোটারদেরকে বাদ দেওয়া, বিতর্কিত সীমানা পুনর্নির্ধারণ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করা। কিন্তু এসব বিষয়ে তেমন অগ্রগতি এখনো দেখা যায়নি। আগামী নির্বাচনে অশিক্ষিত, দুর্বৃত্ত, চাঁদাবাজ, অসৎ ও অপরাধীরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে বিষয়েও শক্ত কোন পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেন তারা।
গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে "অসম্পূর্ণ সংস্কার ও পুরনো বন্দোবস্তের নির্বাচন চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা" শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে"নেক্সাস ডিফেন্স এবং জাস্টিস। সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে যত বিতর্কিত, কলঙ্কিত বা প্রহসনের জাতীয় নির্বাচন এর আগে হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা যতই হোক না কেন কোন নির্বাচনই কখনো বাতিল করা হয়নি। অর্থাৎ যেনতেনো উপায়ে একবার নির্বাচন করে ফেললেই ক্ষমতায় যাওয়া যায়।
বক্তারা ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪’র সমালোচিত, বিতর্কিত নির্বাচনের সাথে জড়িত সকল আমলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জড়িত সকল কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা ও সশস্ত্র বাহিনীর জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং তাদের তালিকা প্রকাশের আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ব্যতীত কোনভাবেই আগামী নির্বাচন করা ঠিক হবে না এবং সঠিক নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের যথাযথ সংস্কারের বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দলেরই ঐক্যমত্য ছিল। নির্বাচন কমিশন সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়ন, প্রাপ্ত বয়স্ক সকল তরুণদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা, বিগত আমলের সকল জাল ও ভুতুড়ে ভোটারদেরকে বাদ দেওয়া, বিতর্কিত সীমানা পুনর্নির্ধারণ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করা এসব বিষয়ে তেমন অগ্রগতি এখনো দেখা যায়নি। আগামী নির্বাচনে অশিক্ষিত, দুর্বৃত্ত, চাঁদাবাজ, অসৎ ও অপরাধীরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে বিষয়েও শক্ত কোন পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি।
বক্তারা সকলে এক বাক্যে প্রতিধ্বনি করেন যে- প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও সশস্ত্র বাহিনী থেকে আওয়ামী লীগের অনুগত ও ভারতের দোসরদেরকে মুক্ত না করতে পারলে কোনভাবেই আগামী নির্বাচন ভালো হবার, একেবারেই কোন সম্ভাবনা নেই। আওয়ামী লীগের সকল লুট করা টাকা ব্যবহার করে সকল পর্যায়ের আওয়ামী লীগের দোসরা আগামী নির্বাচনে একটা বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। কাজেই যেকোনোভাবেই প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আওয়ামী লীগ মুক্ত করতে হবে অন্যথায় বিপর্যয় অনিবার্য।
একই সাথে বক্তারা বলেন বিগত ১৬ বছরে কোন রাজনৈতিক দলই সুষ্ঠুভাবে তাদের রাজনৈতিক প্রোগ্রাম বা চর্চা করতে পারেননি। দলগুলো সমাবেশ করতে পারেনি, দলে কোন কাউন্সিল হয়নি, দলের ভেতরে কোন নির্বাচন হয়নি, দলের গঠনতন্ত্র বা কাঠামোর কোন পরিমার্জন হয়নি এবং দলগুলো এখনো ঠিকমতো গোছানো হয়নি। বস্তুত বিগত ১৬ বছরে হত্যা গণহত্যা, জুলুম নির্যাতন, হামলা মামলার কারণে দলগুলো অনেকটা গুপ্ত রাজনীতি করেছে। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোকেও বর্তমানের মুক্ত পরিবেশে এ সকল কাজগুলো সমাপ্ত করার জন্য বক্তারা অনুরোধ করেন।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিস (ঘউঔ) এর সভাপতি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাসান নাসির (অবঃ)। কী নোট পেপার উপস্থাপন করেন- নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি এন্ড গভর্নেন্স এর পরিচালক অধ্যাপক এসকে তৌফিক এম হক। প্রধান আলোচক ছিলেন কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার, বক্তব্য রাখেন- সাবেক সচিব ও রাজনীতিবিদ এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর আমীর সেলিম উদ্দীন, অধ্যাপক ওয়ারেসুল করিম, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মানারাত ইন্টা. ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবদুর রব
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পুত্র শামীম সাইদী, নেক্সাস ডিফেন্স এন্ড জাস্টিস এর প্রধান সমন্বয়ক মেজর রেজাউল হান্নান শাহীন (অব), লেঃ কর্নেল হাসিনুর রাহমান, বীরপ্রতীক (বরখাস্ত)।