৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত বৃহস্পতিবার গুলশান থানায় এই মামলা করা হয়। এ ছাড়া সিআইডি গতকাল আদালতের নির্দেশে যমুনা ফিউচার পার্কে এক লাখ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেস (বাণিজ্যিক স্থান) ক্রোক করেছে। গতকাল সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম এবং তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের অনুসন্ধান করে সিআইডি। অনুসন্ধানকালে সিআইডি জানতে পারে, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমি কেনা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে বিক্রি করে। বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ ওরফে অপু ও মেহেদী হাসান দিপু গত ৮ মার্চ বিভিন্ন দলিলে সাড়ে ৭ একর জমি বিক্রি করেন। ওই তফসিলভুক্ত জমির মধ্যে গত ১ জুন সোয়া ৬ একরের বেশি জমি রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ ও মেহেদী হাসান বিভিন্ন দলিলে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের কাছে আবার বিক্রি করে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জন করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতিতে বালু ভরাট করার ভুয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন রফিকুল ইসলামের ছেলেরা। তাঁরা ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকে ভুয়া মূল্যায়ন কপি তৈরি করে অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় সম্পত্তির মূল্য দেখিয়ে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেন। এ ছাড়া তাঁরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ না করে অর্থ পাচারের মাধ্যমে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডায় নাগরিকত্ব গ্রহণে ২৪০ কোটি টাকার বেশি (২০ লাখ মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করেন। এ কারণে প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি এবং অর্থ পাচার, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে রফিকুল ইসলাম এবং তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গতকাল গুলশান থানায় মামলা করে সিআইডি। একই সঙ্গে গতকাল ১৩টি ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৭ কোটি টাকা এবং যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল-২-এর এক লাখ বর্গফুট বাণিজ্যিক স্থান আদালতের আদেশে ক্রোক করে সিআইডি।