পিআর পদ্ধতি চালু হলে মনোনয়ন বাণিজ্যের সুযোগ থাকবে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, যারা মনোনয়ন বাণিজ্য করে তারাই পিআর পদ্ধতির বিরোধীতা করে। পিআর পদ্ধতি চালু হলে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে। মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হলে প্রার্থীদেরও দুর্নীতি, চাঁদাবাজি বন্ধ হবে। কোটি কোটি টাকা দিয়ে দলীয় মনোনয়ন কেনার কারণে প্রার্থীরা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীতে লিপ্ত হয়। যেসব দল মনোনয়ন বিক্রি করে তারাই দুর্নীতি, চাঁদাবাজির পথ তৈরি করে দেয়। জামায়াতে ইসলামী কোনো প্রার্থীর কাছে দলীয় মনোনয়ন বিক্রি করে না। এমনকি ইসলামের বিধান মতো কেউ নিজ থেকে প্রার্থী হতেও পারে না। জামায়াতে ইসলামী তৃণমূল থেকে দলীয় সদস্যদের (রুকনদের) মতামত ও স্থানীয়দের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি এবং সততা ও যোগ্যতা নিশ্চিত হয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে থাকে। যার কারণে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা অন্যদের তুলনায় অধিক সৎ, যোগ্য এবং শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত।
গত সোমবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের থানা ও বিভাগীয় দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা ফরিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান ও মো. শামছুর রহমান। মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, অধ্যাপক নুর নবী মানিক, আব্দুস সালাম, মাওলানা মোশাররফ হোসেন, ডা. আতিয়ার রহমান, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, ড. মোবারক হোসেন, কামরুল আহসান হাসান সহ মহানগরীর শূরা ও অন্যান্য কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, তীর, তরবারি, বুলেটের জেহাদের (যুদ্ধ) মতোই, এবার ব্যালট যুদ্ধে ইসলামের বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। এই যুদ্ধ দেশবাসীকে সম্পৃক্ত করতে তৃণমূল পর্যায় থেকে জনগণের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। জনগণকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচি জানাতে হবে। জামায়াতে ইসলামী বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে চায় জনগণের কাছে দলের এই ম্যাসেজ পৌঁচাতে হবে। ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের হৃদয় দখল করেছে। অন্যরা দখল করেছে বাস স্ট্যান্ড, লঞ্চ ঘাট, হাটবাজার, দোকানপাট। আমরা দখল করেছি মানুষের হৃদয়। তারা জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয়তা দেখে এখন নানারকম মিথ্যাচার আর অপপ্রচার চালাচ্ছে কিন্তু যারাই জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদেরই জনপ্রিয়তা কমছে। কারণ জনগণ সবই দেখে, সবই বুঝে। কারা জনগণের পক্ষে কাজ করে আর কারা জনগণকে শোষণ করে এসব জনগণ বুঝে। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালট যুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর বিজয় নিশ্চিত করে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে তিনি উপস্থিত দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ডাকসু, জাকসু নির্বাচনে ইসলামি ছাত্রশিবিরের অভূতপূর্ব বিজয় পাড়ামহল্লা পর্যায়ে জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। এই বিজয়ে আধিপাত্যবাদীদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা এখন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। সকল ষড়যন্ত্র জনগণ ভোটের মাধ্যমে রুখে দিবে ইনশাআল্লাহ। জামায়াতে ইসলামীর শক্তি এদেশের জনগণ। কারণ জামায়াতে ইসলামী দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জনগণের অধিকার আদায়ে আপোষহীন ভূমিকা পালন করে আসছে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তিনি উপস্থিত দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।