বিমান দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় তিনি বলেন, আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এখানকার কর্তৃপক্ষকে আশ্বস্ত করেছি- যা কিছু লাগে আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত আছি।

গতকাল সোমবার বেলা ১টার দিকে উত্তরায় একটি প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয়। অসংখ্য শিক্ষার্থী হতাহত হয়। বিকালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে চিকিৎসারত অগ্নিদগ্ধ শিক্ষার্থীদের দেখতে ছুটে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ সময় তাদের সাথে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ডক্টর শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা এখানে এসে আহত পেয়েছি ৫১ জনকে। এর মধ্যে সাত-আটজন বাদে বাকি সবার অবস্থা গুরুতর। তিনি বলেন, আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এখানকার কর্তৃপক্ষকে আশ্বস্ত করেছি- যা কিছু লাগে আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা দু পায়ে দাঁড়িয়ে প্রস্তুত আছি। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছেন আপাতত যা প্রয়োজন- তা পর্যাপ্ত আছে। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করবেন।

তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, আল্লাহ যেন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা সন্তানদের সুস্থ করে দেন। আহত ও নিহতদের অভিভাবকদের ধৈর্যধারণের জন্য দোয়া করেন জামায়াত আমির। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকটি পরিবারে যাওয়ার চেষ্টা করব।

জামায়াত আমির বলেন, চিকিৎসা অঙ্গনের দলের সমস্ত জনশক্তিকে সেখানে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমাদের যা দরকার সবকিছুর জন্য আমরা প্রস্তুত। এর বিনিময়ে আল্লাহ যেন আহত ও পুড়ে যাওয়া আমাদের কলিজার সন্তানগুলোকে আমাদের বুকে আবার সুস্থ হালতে ফিরিয়ে দেন।

আমীরে জামায়াতের গভীর শোক: এর আগে দেয়া শোক বিবৃতিতে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২১ জুলাই সোমবার বেলা ১টার দিকে রাজধানী ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইল স্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনের উপর বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায়। এতে পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির এবং অনেক শিক্ষার্থী শাহাদাত বরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এ ঘটনায় এখনো শতাধিক শিক্ষার্থী দগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের জনশক্তি ও এলাকাবাসীকে উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ এবং আহতদের চিকিৎসায় সর্বাত্মক সহায়তার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আমি নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করার জন্য মহান রবের নিকট কায়মনোবাক্যে দোয়া করছি। নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। পাশাপাশি আহত সকলের পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

জামায়াতের দোয়া অনুষ্ঠানের

কর্মসূচি ঘোষণা

বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে গতকাল সোমবার বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২১ জুলাই সোমবার বেলা দেড়টার দিকে রাজধানী ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইল স্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনের উপর বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিমানের পাইলটসহ ২০ জন শিক্ষার্থী মর্মান্তিকভাবে শাহাদাত বরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এ দুর্ঘটনায় প্রায় পৌণে দুইশত শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল ২২ জুলাই মঙ্গলবার সকল জেলা/মহানগরীতে নিহতদের রূহের মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে এবং নিহত ও আহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দোয়া অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। এই দোয়া অনুষ্ঠান যথাযথভাবে আঞ্জাম দেওয়ার জন্য সকল জেলা/মহানগরী সংগঠনকে অনুরোধ করা হল।

উল্লেখ্য, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের জনশক্তি ও এলাকাবাসীকে উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ এবং আহতদের চিকিৎসায় সর্বাত্মক সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।