দেশের মানুষের পাশে থাকার জন্য পুলিশ সদস্যদেরকে রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে ‘দূরে থাকতে’ বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রাজনৈতিক কোনো দলের পক্ষাবলম্বন এবং বিশেষ সুবিধা প্রদানেও ‘বিরত থাকার’ নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ভাববেন না। মনে রাখবেন পেশী শক্তি কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে পারে না। এখন যারা পরাজিত, ১০ বছর পর তারাই তোমার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। নির্বাচনি দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সঙ্গে সম্পাদনের লক্ষ্যে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ‘নির্বাচনি প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

গতকাল রোববার ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে দেড় শতাধিক প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ধাপে ধাপে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়েছে।

পুলিশের সব কাজ ‘জনস্বার্থে এবং আইন দ্বারা পরিচালিত’ হওয়ার বিষয়টি ‘স্মরণ করিয়ে’ দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের আমি বলছি যে, আপনারা কিন্তু রাজনৈতিক দলের থেকে একটু দূরে থাকবেন। আমি এর আগে বহুবার আপনাদের বলছি। আপনারা এখন যদি তেল দেওয়া শুরু করে দেন, আপনাদের কিন্তু নির্বাচনের পরে তেল শেষ হয়ে যাবে। যে তেলটা রিজার্ভ করে রাখছে সে তখন কিন্তু তেল দিয়া উতরে যাবে। এজন্য আপনারা কোনো দলের দিকে যাবেন না। আপনারা একেবারে জনগণের যে আশা-আকাঙ্খা সেটা পূরণ করার জন্য আপনারা চেষ্টা করবেন।

এ সময় সুষ্ঠু নির্বাচন শুধুমাত্র আইনশঙ্খলা বাহিনীর উপর ‘নির্ভর করে না’ বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, এটার কতগুলো স্টেকহোল্ডার রয়ে গেছে। এরমধ্যে একটা হল জনগণ, তারা কীভাবে নির্বাচনটা করতে চায়। সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার যদি বলি পলিটিক্যাল পার্টি, তারা নির্বাচনটা কীভাবে চাচ্ছে? তারপরে আছে প্রশাসন, তারপরে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখন সবার সহযোগিতা ছাড়া একটা সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ, আমাদের প্রধান উপদেষ্টার যে আশা একটা উৎসবমুখর নির্বাচন এটা কিন্তু সম্ভব হবে না।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘একটুখানি খারাপের দিকে’

রাজবাড়ীতে কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে ফেলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতোদিন যে রকম ছিল, গত কয়েকদিনের ঘটনায় আমি বলব একটুখানি খারাপের দিকে গেছে। এটাকে আবার ‘পুরো আগের দিক ‘নিয়ে আসতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অপরাধীরা অপকর্ম করতেছে, তাদের কিন্তু আমরা আবার আইনের আওতায় নিয়ে আসতেছি।

অনুষ্ঠান শেষে রাজবাড়ীর ঘটনা প্রসঙ্গে করা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজবাড়ীর ঘটনা আগে তদন্ত করে দেখি, তদন্ত রিপোর্টের পরে আমরা হয়ত পুরাটা আপনাদের জানাতে পারব। এখন এটা তদন্তাধীন রয়ে গেছে, কিন্তু এটা যারা করছে তাদের কিন্তু অলরেডি ৫ জনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পরে আমরা হয়ত পুরা ঘটনাটা জানতে পারব।