বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ধানমন্ডির ‘মাহবুব ভবন’। আগামীকাল মঙ্গলবার শাশুড়ি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেশে ফিরছেন তিনিও। যিনি ১৭ বছর আগে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে স্বামী তারেক রহমানের সাথে ঢাকা ছেড়েছিলেন।

তার বাবার সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসা ধানমন্ডির ৫ নং সড়কে এই ‘মাহবুব ভবন’। এখানে এখন তার সহধর্মিণী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু এবং বড় মেয়ে শাহীনা জামান ও তার পরিবার বসবাস করেন। সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু গত কয়েকদিন আগে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট মেয়ে জোবায়দা রহমান ঢাকায় এসে বাবার বাসায় উঠবেন বলে বাসার নিরাপত্তা ও সাজসজ্জা করা হয়েছে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুম্মন দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্য্না তারেক রহমানের ওয়াইফ জোবায়দা রহমান উনি আসবেন এই বাসায়। সেজন্য বাসার সাজসজ্জা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, পানি বিদ্যুৎ গ্যাস, জেনারেটর প্রভৃতি কাজ চলছে। ইনশাল্লাহ উনি(জোবাইদা রহমান) আসার আগেই এই বাসার সব কাজকর্ম শেষ হবে। উনাকে রিসিভ করার জন্য বাসা প্রস্তুত হয়ে যাবে।

১৭ বছর আগে জোবায়দা রহমান দেশ ছেড়েছিলেন একমাত্র মেয়ে ছোট জায়মাকে নিয়ে স্বামী তারেক রহমানের সাথে। এক-এগারোর সরকার এবং পরবর্তিতে আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনার সরকারের রোষানলে পড়েছিলেন স্বামীর সাথে জোবায়দাও। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, তার সহধর্মিণী জোবায়দা রহমান ও মা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই মামলায় জোবায়দা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত।

মাহবুব আলী খানের দুই মেয়ের মধ্যে জোবায়দা রহমান ছোট, সেজন্য বাবা-মায়ের খুব আদুরে। জন্ম সিলেটে। পড়ালেখা করেছেন ঢাকায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাবা-মায়ের আগ্রহে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। তিনি সেখান থেকে এমবিবিএস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ মেধায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৫ সালে বিসিএস দিয়ে কর্ম জীবন শুরু করেন সরকারি চিকিৎসক হিসেবে। জোবায়দা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস-স্বাস্থ্য) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে লন্ডন যাওয়া পরে শেখ হাসিনার সরকার তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। লন্ডন যাওয়ার পরে জোবায়দা ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে স্নাতকোত্তর-এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।

জোবায়দা রহমানের বাবা রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খান ১৯৭৮ সালের ৪ নভেম্বর ১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর প্রধান ছিলেন। এরপর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকারের সময়েও তিনি যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন মাহবুব ভবনের পুরো কাজকর্ম তদারকি করছেন। তিনি বলেন, মাহবুব ভবন এমনিতেই পরিপাটি একটি বাসা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। তারপরও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের স্ত্রী জোবায়দা রহমানের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাসার ভেতরে এবং বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক করেছি। বাসার চারপাশে দেয়ালের উপরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে জড়িত পুলিশ সদস্য ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সনের সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এই বাসার চারপাশে দেয়াল রয়েছে। বাসার আঙিনায় সামনের দিকে রয়েছে ফুলের বাগান। আছে নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য গার্ড রুম।