গাজা অভিমুখী কনসায়েন্স নৌযানে থাকা আলোকচিত্রী ও ডকুমেন্টারি পরিচালক শহিদুল আলম বলেছেন, তাদের গাজা পৌঁছানোর সময়সূচি শিথিল হয়েছে এবং কোথায় কিংবা কখন তাদের আটকানো হতে পারে তা আগেভাগে বলা কঠিন। তিনি রোববার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্যটি শেয়ার করেন। এদিকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সবগুলো নৌ-যান ইসরাইল কর্তৃক আটক হলেও ভূমধ্যসাগর হয়ে গাজার উদ্দেশে যাত্রা অবিরত রেখেছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌ-বহর। এ বহরে ‘কনসায়েন্স’ নামে একটি বড় জাহাজ রয়েছে, যার আওতায় রয়েছে আরও আটটি নৌ-যান। বর্তমানে সবগুলো একসঙ্গে গাজা অভিমুখে রয়েছে। কনসায়েন্স জাহাজটিতে অবস্থান করছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। গত শনিবার দুপুরে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে কনসায়েন্স জাহাজ সম্পর্কে জানান তিনি।
দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম লেখেন, প্রথম প্রশ্নের উত্তর জানতে, সবচেয়ে ভালো উপায়, ট্র্যাকার ব্যবহার করে আমাদের যাত্রাপথ অনুসরণ করা। বৈশ্বিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘ফরেনসিক আর্কিটেকচার, যার সঙ্গে আমরা আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ওপর একটি তদন্তমূলক ফিল্ম তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলাম-এই সাইটের মাধ্যমে কনসায়েন্স ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস উভয় নৌবহরের যাত্রাপথ ট্র্যাক করছে। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে শহিদুল আলম লেখেন, ‘এর উত্তর নির্ভর করছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আমাদের ওপর কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেটার ওপর। অতীতের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় যে তারা আমাদের যেতে দেবে না। আটক করা হতে পারে। এরপর আমাদের ফেরত পাঠানো হতে পারে, নয়তো কারাগারে পাঠানো হতে পারে। কখন, কোথায় এটা ঘটতে পারে, তা আগে থেকে বোঝা অসম্ভব। এটা আমাদের হাতে নেই।
এ ক্ষেত্রে ‘আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন’ উল্লেখ করে শহিদুল আলম পোস্টে আরও লেখেন, ‘যদি আপনারা এমন পদক্ষেপ নিতে পারেন, যা আমাদের অবরুদ্ধ গাজায় পৌঁছানোর জন্য চাপ তৈরি করে, তবে সেটা হবে সবচেয়ে ভালো ফলাফল। একমাত্র উপায় হলো ইসরাইলের ওপর সাধারণ মানুষের পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখা। কাজেই এবার আপনাদের সুযোগ, পদক্ষেপ নিন। এক হোন, প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এটা অধিকার প্রতিষ্ঠা আর ন্যায়বিচার আদায়ের একটি প্রচার। আমাদের একসঙ্গে একযোগে এটি করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে গতকাল রোববার সকালে শুভেচ্ছাবার্তা পাওয়ার কথাও ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন শহিদুল আলম।
শহিদুল আলম গাজা অভিমুখে থাকা কনসায়েন্স নৌযানে আছেন। কনসায়েন্স হলো আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)’ ও ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি)’ নৌবহরের একটি জাহাজ। এফএফসি হলো ইসরাইলের অবরোধ ভাঙতে ও গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার’ যৌথ আয়োজক জোটগুলোর একটি। তবে তাদের বহরে কোনো খাদ্যসহায়তা নেই। কনসায়েন্সে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কয়েক ডজন সাংবাদিক রয়েছেন। এর দুই/তিন দিন আগে বৃহস্পতি ও শুক্রবার, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার আগের বহরটির ৪৪টি নৌযান আটকে পাঁচ শতাধিক অভিযাত্রী ও অধিকারকর্মীকে আটক-গ্রেফতার করে ইসরাইলি বাহিনী।
কনসায়েন্স হলো আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহরের একটি জাহাজ। এফএফসি হলো গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামক বৈশ্বিক প্রচেষ্টার অংশ, যা ইসরাইলের অবরোধ ভেঙে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর উদ্যোগে জড়িত। তবে কনসায়েন্সসহ এফএফসির বহরে কোনো খাদ্য সহায়তা নেই।
এদিকে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সবগুলো নৌ-যান আটকে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। ‘দ্য ম্যারিনেট’ নামে পোল্যান্ডের পতাকাবাহী একটি নৌ-যান আটকের মধ্য দিয়ে গাজায় অবরোধ ভাঙতে যাওয়াদের নিবৃত করে দখলদাররা। আল জাজিরা জানিয়েছে, দ্য ম্যারিনেটসহ ইসরাইলি সেনারা মোট ৪৪টি নৌযান আটকে দিয়েছে। আটক করেছে প্রায় ৫০০ অধিকারকর্মীকে। তারা এখন অনশনে বসেছেন।