নবেম্বর মাসের প্রথমদিন বৃষ্টির দেখা পেল নগরবাসী। গতকাল শনিবার ছিল নবেম্বর মাসের প্রথম দিন। এদিন বিকেলে রাজধানীর আকাশে বিকালেই নেমে আসে সন্ধ্যা। বিকেলে মুখ কালো করে দিনের আলোকে নিভিয়ে দেয় মেঘমালা। বিকাল সাড়ে চারটা বাজতেই যেন সন্ধ্যা নেমে আসে রাজধানী ঢাকায়। কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কোথাও হালকা বৃষ্টি পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। অঝর ধারায় ঝরতে থাকে। রাস্তাঘাট তলিয়ে দেয়। চলাচল করা গাড়িগুলোতে হেডলাইট জ্বলতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিতে হাঁটু পানি জমতে দেখা গেছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোন্থা দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হলেও এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশজুড়ে অব্যাহত রয়েছে বৃষ্টি। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায়ও দেশে সর্বোচ্চ ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অবস্থায় শনিবার রাতের মধ্যেই দেশের ১০ জেলায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল ৩টা থেকে দিবাগত রাত ১টার মধ্যে যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও সিলেটের ওপর দিয়ে দক্ষিণপূর্ব অথবা পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। আগামী ৫ দিনও বৃষ্টিপাতের এমন দাপট অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গত ২৪ ঘণ্টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বোচ্চ ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে এই সময়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়াতেই, ২০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে গতকাল বিকেলের বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েন পথচারীরা। আচমকা এমন ধারায় অনেককেই ভিজতে দেখা গেছে। এছাড়াও টাঙ্গাইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য গতকাল সকালেই দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। আকাশও আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ ছত্তিশগড় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
এদিকে পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। অবশ্য কেউ কেউ বলাবলি করতে শোনা যায় এই বৃষ্টির পরই শীত নামবে।